• ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

রাষ্ট্রীয় পাটকল চালু না হলে কঠোর আন্দোলন: বাম গণতান্ত্রিক জোট

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
রাষ্ট্রীয় পাটকল চালু না হলে কঠোর আন্দোলন: বাম গণতান্ত্রিক জোট

একুশে নিউজ:: রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল, পিপিপি বা লীজ নয় আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু, পাটখাত ধ্বংস ও দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ, লোকসানের জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাসদ জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমনের সভাপতিত্বে ও সিপিবি নেতা নিরঞ্জন দাশ খোকন এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা সিপিবি সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, বাসদ (মার্কসবাদী) সদস্য এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ শোয়েব, বাসদ সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন শ্রমিক ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক শাহজান আহমদ, বাসদ (মার্কসবাদী) রেজাউর রহমান রানা,ছাত্র ফ্রন্ট মহানগর সভাপতি সঞ্জয় দাশ, ছাত্র ফ্রন্ট মহানগর আহবায়ক সনজয় শর্মা,ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মো. নাবিল এইচ প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, করোনা মহামারিতে পুরো দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা বিপন্ন। ঠিক এ সময়েই বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ করে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক বেকার করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। এই দুর্যোগে সারা দুনিয়ায় নানা প্রণোদনা দিয়ে মানুষের জীবিকা রক্ষার চেষ্টা চলছে, বাংলাদেশে সেখানে করোনা মহামারির সুযোগ নিয়ে সোনালী আঁশের ঐতিহ্যবাহী পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার প্রশ্নের মুখে মুখ রক্ষার তাগিদে একবার বলছে পাটকলগুলোকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) পুনরায় চালু করা হবে, আবার বলছে না লিজে চালানো হবে।

করোনা পরবর্তী বিশ্বব্যাপী পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ার ফলে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা বাড়বে বিপুলভাবে। সারা ইউরোপে একযোগে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। ধারণা করা যায়, ২০২২ সাল নাগাদ শুধু পাটের ব্যাগের বৈশ্বিক বাজার দাঁড়াবে ২৬০ কোটি ডলারের। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জুট জিও, টেক্সটাইলের চাহিদা ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।
বক্তাগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের পেছনে সরকারের বড় অজুহাত লোকসান। কিন্তু কেন লোকসান, কাদের কারণে লোকসান, লোকসান কাটাতে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল? সে সব প্রশ্নের উত্তর নেই।

বক্তারা বলেন,রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ৫০ হাজার পাটকল শ্রমিক, ৪০ লাখ পাটচাষি ও পাটচাষের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ৪ কোটি মানুষ। বন্ধ হওয়ায় সরকারি পাটকল আর পাট কিনবে না। বেসরকারি পাটকলগুলো সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো পাটের দাম নিয়ন্ত্রণ করবে। ভারতে কাঁচা পাট চোরাচালান বাড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। পাট বাংলাদেশের একটি স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি রচনা করেছিল, যার কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয়, দেশের চাহিদা পূরণ করে যা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয় সেই শিল্প ও শ্রমিক কৃষকের স্বার্থে পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।