একুশেনিউজ ডেস্ক::
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ‘ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড’ (এনজিএফএফএল) এর ১ লট স্ক্র্যাপ মালামাল বিক্রির কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে বিক্রির আদেশ না দিতে রুল জারি করেছেন উচ্চ আদালত। ৩০ ডিসেম্বর আদালত সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সহ তিনজনকে কারখানার মালামাল বিক্রির আদেশ না দিতে নির্দেশ এবং ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে রুলনিশি জারি করেছেন আদালত। সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ পাওয়া মেসার্স আতাউল্লাহ শতকোটি টাকার দরপত্র পাওয়ার পর শর্তভঙ্গ করার অভিযোগ করে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান রিমি নির্মাণ সংস্থা নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মো. জিল্লুর রহমান। তার রিটের প্রেক্ষিতে আদালত ওই আদেশ ও রুল জারি করেন বলে জানিয়েছেন, বাদি পক্ষের আইনজীবী এম. শাখায়াত হোসেন। শনিবার (২ জানুয়ারি) আদালতের আদেশ কপি সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মফিজুর রহমান গ্রহণ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বিলুপ্ত ‘ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি’র দীর্ঘদিন থেকে যন্ত্রপাতি বিকল থাকা ও অব্যাহত লোকসানের মুখে রাষ্ট্রায়ত্ত ওই সার কারখানাটির মালামাল বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে বিদায়ী বছরের ২ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহবান করে নতুন প্রতিষ্ঠিত শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড। এতে অংশ নেয় ৯টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১৪ অক্টোবর দরপত্র খোলা হয়। এর মধ্যে ১০৩ কোটি ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয় সিলেটের ‘মেসার্স আতাউল্লাহ’ নামের প্রতিষ্ঠান। ভ্যাট-ট্যাক্সসহ টাকার পরিমান দাড়ায় ১১৫ কোটি ৮৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৫ টাকায়।
কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি ১৮ নভেম্বরের মধ্যে ব্যাংক নিরাপত্তা জামানতের ১০ ভাগ হিসেবে ১০ কোটি ৩০ লাখ ৭ হাজার ৫শ টাকা জমা দেওয়ার কথা। ওই সময়ের মধ্যে নিরাপত্তা জামানত জমা না দিলে শর্ত মোতাবেক দরপত্র জামানতের ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত হবে। কিন্তু মেসার্স আতাউল্লাহ’র মালিক সিলেটের শিল্পপতি আতাউল্লাহ সাকের ১৮ নভেম্বরের মধ্যে জমা দেননি। সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তার দরপত্র জামানত বাতিল না করে তাকে জামানত প্রদানের সুযোগ ও নোটিফিকেশন অব এ্যাওয়ার্ড (নোয়া) প্রদান করেন সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ অবস্থায় শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ ও কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে মালামাল বিক্রির আদেশ না দিতে উচ্চ আদালতে রিট (পিটিশন নং-১০২৬০/২০) করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা রিমি নির্মাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা অংশীদার মোঃ জিল্লুর রহমান।
রিটের প্রেক্ষিতে আদালতের বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ৩০ ডিসেম্বর আদেশ প্রদান করেন। এতে শিল্প মন্ত্রনালয়ের সচিব, বিসিআইসির চেয়ারম্যান ও শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মেসার্স আতাউল্লাহর পক্ষে বিক্রির আদেশ না দিতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ১৫ দিনের মধ্যে জবাব না দিলে আদালত তা নিস্পত্তি করবেন বলে রুলনিশি জারি করেন। এ অবস্থায় শতকোটি টাকার মালামাল বিক্রিতে টানাপড়েনে পড়েছে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে শর্ত ভঙ্গ করার পরও মেসার্স আতাউল্লাহকে সময় বর্ধিত করে নিরাপত্তা জামানত প্রদানের সুযোগ দিয়ে নোয়া প্রদান করায় ক্ষুব্দ অন্যান্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা অভিযোগ করেন, শর্ত ভঙ্গের পরও সার কারখানার কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আতাউল্লাহকে কাজ দেওয়া হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, ১৮ নভেম্বর পর নিরাপত্তা জামানত জমা দেওয়ায় সরকারের পিপিআর শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে,যা আইনের পরিপন্থি।
এ অভিযোগ প্রসঙ্গে সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মফিজুর রহমান জানান, সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি। শর্ত না মানা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আতাউল্লাহ সাকের সময় মত নিরাপত্তা জামানত জমা না দিতে পারায় সময় নেন। কর্তৃপক্ষ তাকে সময় দিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি জামানত জমা দিলে তাকে কাজও সমঝে দেওয়া হয়। উচ্চ আদালতের আদেশের অনুলিপি পেয়েছেন বলে এমডি জানান।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302