নিজস্ব প্রতিবেদক:: এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধুকে ধর্ষণ মামলার শুনানী আবারও পেছালো। আজ রবিবার (৭ মার্চ) ধর্ষণ মামলার শুনানী ছিল। কিন্তু দুটো মামলার বিচারকার্য একই আদালতে ও একসঙ্গে করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই আদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন থাকায় সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে আলোচিত মামলার শুনানী হয়নি।
আদেশ আশার পর পরই ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া কার্যক্রম শুরু হবে বলে বাদী পক্ষের আইনজীবীদের জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক ইনাম চৌধুরী।
এদিকে শুনানী উপলক্ষে রবিবার সকালে কঠোর নিরাপত্তায় সকল আসামীদের আদালতে হাজির করে পুলিশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান শহীদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মহানগর দায়রা জজ আদালতে দন্ডবিধি ২৫০ নং মামলাটির শুনানীর তারিখ ছিল গত ১০ ফেব্রুয়ারি। তখন আমরা হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিষয়টি আদালতকে অবগত করলে আদালত মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখেন। আজ সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে একই সাথে দুই মামলা চলার বিষয়ে অবগত করলে আদালত আমাদেরকে জানিয়েছেন একই সাথে একই ট্রাইব্যুনালে দুই মামলা বিচার কার্যক্রম চলার জন্য একটি রিকুজিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেছে সেখান থেকে আদেশ আসার পর পরই মামলার কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের আগে তার স্বামীকে (মামলার বাদী) মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে আরও একটি মামলা হয়। ধর্ষণ মামলার আট আসামিই এই মামলার আসামি। এতে ধর্ষণ মামলার ৫১ জন সাক্ষীকেও সাক্ষী রাখা হয়েছে। একই ঘটনার পৃথক দুটি মামলা একই ট্রাইব্যুনালে চললে বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার পাবেন। সেই সাথে বিচারকার্য বিলম্বিত হবে না মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য: গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেফতারের পর আটজন আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মামলার পৃথক দুটি অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে ধর্ষণে সহায়তা করতে অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন।