
সম্মিলিত সনাতন সমাজের উদ্যোগে ইস্কন সিলেটে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ। উক্ত সভায় সনাতনী ধর্মসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ঘৃণা ও বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবী জানান।
সভায় বক্তব্য রাখেন এডভোকেট প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য্য- সভাপতি, হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা, এড. মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা- যুগ্ম সম্পাদক পূজা পরিষয়, কেন্দ্রীয় কমিটি, তপন মিত্র, বন্ধু প্রীতম ব্রহ্মচারী- অধ্যক্ষ জগৎবন্ধু সুন্দর মঠ, সিলেট। এড. প্রশান্ত কুমার পাল- সিনিয়র এডভোকেট, শ্রী নন্দলাল শর্মা, কৃপেশ পাল- সাধারন সম্পাদক, হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা, রজত কান্তি ভট্টাচার্য্য, প্রদীপ কুমার দেব, রজত কান্তি গুপ্ত, নির্মলেন্দু চৌধুরী পান্না, ডা. রঞ্জিত কুমার রায়, এড. বনানী দাস ইভা, শ্রী বুদ্ধি গৌর দাস, এড. দিলীপ কুমার দাশ চৌধুরী, শ্রী বলদেব কৃপা দাস, শ্রী দেবর্ষি শ্রীবাস দাস।
উক্ত সভায় বক্তারা বলেন- দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লায় সৃষ্টি দেশের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে গণ মাধ্যমে প্রকাশিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দুঃখজনক, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রকারান্তরে সরকারকে বিব্রত করার সামিল। সরকার যেখানে সাম্প্রতিক সহিংসতা রোধে যথা সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজ কল্পনা প্রসূত বক্তব্য- সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত সহিংসতাকে সমর্থন ও উস্কে দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রেরিত বিবৃতিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, পূজা মন্ডপে হামলা, ভাংচুর, মন্দিরে অগ্নি সংযোগ, লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ ও পবিত্র গীতা-ভাগবত গ্রন্থে অগ্নি সংযোগ বিষয়টি অত্যন্ত সুচতুর ভাবে এড়িয়ে গিয়ে নিজস্ব মতামত উপস্থাপন করেছেন। যা অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক যা সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে প্রত্যাশা করিনি। বক্তারা আরো বলেন, সম্প্রতি সংঘটিত ঘটনা দেশ ও বিদেশের গণমাধ্যম ও ইলেট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। যা আজ সারা দেশ ও বহির্বিশে^র মানুষের কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট। কিন্তু মন্ত্রী মহোদয় এসবের সাথে দ্বিমত পোষন করেছেন। যা প্রকৃতপক্ষে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো। মন্ত্রী মহোদয় উল্লেখ করেছেন এই সহিংসতার ঘটনায় সারা দেশে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চার জন মারা গেছে পুলিশের গুলিতে, অন্য দুই জন মারা যান স্বাভাবিক মৃত্যুতে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হল নোয়াখালী চৌমুহনী ইস্কনের সাধুদের এলোপাথারি কুপিয়ে তাদের লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। এবং তিনজনকে ধারালু অস্ত্র দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। যারা এখন ও জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে রয়েছে অথচ দীবালোকের মতো স্পষ্ট এই ঘটনাকে মন্ত্রী মহোদয় স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিয়ে তামাশা করছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন একটি মন্দিরে ও অগ্নি সংযোগ করা হয়নি। তাহলে চৌমুহনী ইস্কন মন্দিরে উগ্রবাদীরা কি ফুল নিয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া রংপুর পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় সংখ্যালঘুদের পুরো গ্রাম জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে অত্যাচারীতদের পাশে দাঁড়াবেন। দূর্ভাগ্যজনক ভাবে তিনি তাদের নিয়েও তামাশা করলেন। যা আমাদেরকে কাঁটা গায়ে নুনের ছিটা দেওয়া। কুমিল্লায় দিলীপ দাসের মৃত্যুকেও স্বীকার করলেন না তিনি। পূর্বের ধারাবাহিকতা অনুসারে কুমিল্লায় পবিত্র কোরান অবমানার নাটক তৈরি করা হয়েছে। যার মাশুল দিল দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। বক্তারা বলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বিবৃতি প্রত্যাহার না করলে উনাকে সর্বতোভাবে বর্জন করা হবে এবং দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।