ডেস্ক রির্পোট :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বহুল আলোচিত লতিফিয়া ইরশাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণীর ছাত্র, রহমান নগর গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর বর্গাচাষী আকবর আলীর শিশু পুত্র রবিউল ইসলাম হত্যায় জড়িত পলাতক ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার ও সকল আসামীদের ফাঁসির দাবিতে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছেন নওধার, রহমান নগরসহ আশ পাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক নারী পুরুষ এবং জনপ্রতিনিধিসহ নানা পেশার মানুষ।
গত ২০/১১/২০২১ ইং শনিবার আসরের নামাজের পর স্থানীয় বৈরাগী বাজারে নিহত রবিউল হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। লতিফিয়া ইরশাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র/শিক্ষকসহ আশ পাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মিছিল সহকারে লোকজন এসে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন, আমাদের বিশ্বনাথ প্রতিনিধি ও বিশেষ প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর শিশু রবিউল ইসলাম নিখোঁজ হন এবং ১৩ অক্টোবর ভোর ছয় ঘটিকায় লাশ হয়ে ভাসেন বাল্লা ব্রিজ সংলগ্ন ২ ফুট পানির উচ্চতার একটি ডোবায়। তৎকালীন বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে যে সুরতহাল রির্পোট প্রস্তত করেন তাহাতে উল্লেখ ছিল “মৃতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন, লিঙ্গ কাটা, অন্ডকোষ থেতলানো, নাক ও কান ছিলানো এবং রক্ত বের হচ্ছে এবং লাশের ঘাড় ভাঙ্গা/মটকানো, তাছাড়া পেটে চাপ দিলে মুখ ও লিঙ্গ দিয়ে প্রচুর পানি বের হয়ে আসে” যাহা উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে প্রস্তুতকৃত। পুলিশের প্রস্তুতকৃত সুরতহাল রিপোর্ট থেকে প্রমাণ হয় যে, অত্যন্ত নির্মমভাবে শিশু রবিউলকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছিলো।
ঐ দিন অর্থাৎ ১৩ অক্টোবর নিহত রবিউল ইসলামের পিতা মোঃ আকবর আলী বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামী করে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাহার নং- ৯, তাং ১৩/১০/২০২০ইং এবং পুলিশ তখনই মামলার ৩নং আসামী মাজেদা বেগমকে গ্রেফতার করে এবং ধৃত মাজেদা বেগম বিজ্ঞ আদালতে উক্ত মামলার প্রধান ১নং আসামী সাদিকুর রহমন ও অজ্ঞাতনামা অন্যান্যদের এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, দীর্ঘ ১৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও পুলিশ প্রধান আসামী সাদিকুর রহমানকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়।
এদিকে নিহত মাদ্রাসা ছাত্র রবিউল হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে তখন উত্তপ্ত বিশ্বনাথ, একের পর এক মানববন্ধন ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য স্মারকলিপি প্রদানের কারনে তখনকার সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার শিরোনাম হয়ে উঠে আলোচিত এ শিশু হত্যা। কিন্তু তবুও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অবশেষে এলাকাবাসীর চাপের মুখে থানা পুলিশ বাদীর সন্দেহজনক আসামী গোয়াহরি গ্রামের গোলাম হোসেনকে গ্রেফতার করে দীর্ঘ হাজত বাসের পর তিনি উচ্চ আদালতের জামিনে বের হয়ে আসেন, কিন্তু এক অজানামন্ত্রে মুগ্ধ পুলিশ, কোন এক অদৃশ্য শক্তির কারনে প্রধান আসামী ও বাদীর অপরাপর সন্দিগ্ধ আসামী নিয়ামত উল্লাহ, ফয়জুল প্রকাশ ছয়দুল ও হাসানকে ধরতে ব্যর্থ হয়।
অবশেষে গত ৭ নভেম্বও উক্ত মামলার প্রধান আসামী আদালতে আত্মসমর্পন করেন। পুলিশের দশ দিনের রিমান্ডের প্রার্থনায় বিজ্ঞ আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে থানা পুলিশ সাদিকুর রহমান কে বিশ্বনাথ থানায় নিয়ে আসলে ঘুমন্ত এলাকাবাসী আবারো জাগ্রত হয় এবং সাদিকুর রহমান এর ফাঁসির দাবিতে ও বাকী ৩ জন পলাতক আসামীকে দ্রæত গ্রেফতার এর জন্য শুরু হয় ডিআইজি, ডিসি ও এসপি বরাবরে গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ প্রদান করেন এবং অবশেষে মানববন্ধন।
উক্ত মানববন্ধনে নিহত রবিউলের পিতা-মাতা কান্নাজড়িত কন্ঠে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন করে জানান যে, অচিরেই যেনো নিহত শিশু রবিউল হত্যায় জড়িত সকল পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করা হয় এবং সর্বোচ্চ শাস্তির প্রদান করা হয়। “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমাদের আকুল আবেদন, আমরা গরীব বলে কি ছেলে হত্যার বিচার পাবো না মাননীয় মা জননী”।
উক্ত মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা যুবলীগ নেতা আব্দুল কাহার, উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পার্থ সারতী দাশ পাপ্পু, সংগঠক শামসুল ইসলাম, বিশিষ্ট শালিস ব্যক্তিত্ব ইউসুফ আলী ও আনিসুজ্জামান খাঁন (সাবেক মেম্বার) প্রমুখ।
উপস্থিত বক্তাদের একটাই দাবি, অচিরেই উক্ত খুনের সাথে জড়িত সকল পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করা হউক এবং এদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302