একুশে নিউজ ডেস্ক : শিক্ষা শান্তি ও প্রগতির শ্লোগান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সৃষ্টি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলা ভাষা, বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত গৌরবময় ঐতিহ্য ধারণ করে আগামীর সোনার বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যে মাথা উঁচু করে এই সংগঠন পথ চলেছে। আজ মঙ্গলবার দেশের এই প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠিত একটি শুদ্ধ সংগঠন। পিতা মুজিব সোনার বাংলা নির্মাণের লক্ষ্যে কর্মী গড়ার পাঠশালা হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যার সঙ্গে বিনয়, শিক্ষার সঙ্গে সুশিক্ষা, কর্মের সঙ্গে নিষ্ঠা ও দক্ষতা, জীবনের সঙ্গে দেশপ্রেম এবং মানবীয় গুণাবলির সমন্বয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আজ অতিক্রম করেছে গৌরবের ৭৩টি বছর। এই দীর্ঘ পথ চলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাফল্যের এই অবস্থায় আসতে অনেক পাথর ভাঙ্গতে হয়েছে। পোহাতে হয়েছে অনেক কালো রাত্রি। ছাত্রদল, শিবির অনুপ্রবেশ করে ছাত্রলীগকে বারবার কলংক করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা এবং পাকিস্তানী প্রেমিদের রোষানলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আজ মাথা উঁচু করে দেশের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে সময়ের সাথে দেশের প্রয়োজনে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জন্মের গোড়া থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সাত দশকের সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি হয়ে এদেশের কোটি ছাত্রজনতার হৃদয়ে প্রাণের সংগঠন হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও এগারো দফা আন্দোলন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসহ এই সময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্বাধীকার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগ মুজিব বাহিনী গঠন করে এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ বিজয় লাভে ভূমিকা পালন করে।
১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগের নিরঙ্কুস জয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সক্রিয় অংশগ্রহনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন। একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের দীর্ঘ পথচলায় ছাত্রলীগ হারিয়েছে তার সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই সংগঠনের ১৭ হাজার বীরযোদ্ধা তাদের বুকের তাজা রক্তে অংকন করেছে লাল-সবুজের পতাকা। অর্জন হয়েছে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এক সার্বভৌম মানচিত্র। এই বীর শহীদ যোদ্ধারা ছিলেন অনুপ্রেরণা, শক্তি এবং সাহস।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে আছে পিতা মুজিবের আদর্শ, কাজী নজরুলের মতো বাঁধ ভাঙার শৌর্য, আছে ক্ষুদিরামের প্রত্যয়, সুকান্তের অবিচল চেতনা। এজন্যই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শিক্ষার অধিকার রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থ সুরক্ষায় সবসময় মঙ্গলপ্রদীপের আলোকবর্তিকা হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি দুস্থ শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, বৃক্ষরোপণ, পথশিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ পাঠদান কর্মসূচি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের চর্চা।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার সোনালি অতীতের মতো সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ার প্রত্যয়ে। দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টায় ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে সর্বোচ্চ অবদান রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, 'ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস, ছাত্রলীগের ইতিহাস স্বাধীনতার ইতিহাস।' এই মর্ম কথা হৃদয়ে ধারন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিটি ন্যায্য আন্দোলন ও সংগ্রামের প্রথম সারিতে অবস্থান করে চলেছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা ও ১১ দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং ছিয়ানব্বইয়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনসহ সব প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এই সংগঠনের নেতাকর্মীদের অবিস্মরণীয় ভূমিকা এখন দৃষ্টান্ত
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নবীনদের মেধা ও প্রেমের সংগঠন। দেশ গড়ার প্রত্যয়ে, স্বাধীনতার মূলমন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে নতুন শক্তিতে জ্বলে ওঠার নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আজকের প্রতিবার্ষিকীতে প্রত্যাশা একজন প্রকৃত ছাত্রই ছাত্রলীগ করবে। যারা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করেছে তারা ছাটাই হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নতুন প্রজন্মের বিবেক ও চেতনার সংগঠন এবং অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে সব অশুভ শক্তিকে পেছনে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে বেঁচে থাকবে চিরকাল।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302