একুশে নেট ডটকম :: প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত নগরীর জিন্দাবাজারস্থ কাকলি শপিং সেন্টারের সাবেক পরিচালক মুজিবুল হক জাবেদের গ্রেফতারের খবর নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কেউ বলছেন অভিযান হলেও গ্রেফতার সম্ভব হয়নি। আবার অন্য একটি পক্ষ বলছে তাকে গ্রেফতারের পর বুধবার দুপুরের দিকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। পুরো বিষয়টিকে নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হলেও গ্রেফতারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
জানা গেছে, মুজিবুল হক জাবেদ (৪৬) নগরীর দাড়িয়াপাড়া এলাকার মৃত আজিজুল হক ধনমিয়ার ছেলে। তাদের যৌথ সম্পত্তি জিন্দাবাজারের কাকলি শপিং সেন্টার। এই মার্কেটে দীর্ঘদিন জাবেদ ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এসয় তিনি জনৈক কবির আহমদ নামক একজন ভাড়াটিয়ার সাথে হাত মিলিয়ে বিদ্যুৎ বিলের প্রায় ৪৯ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে সম্প্রতি সিলেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন তারই চাচাত ভাই এবং কাকলি শপিং সেন্টারের বর্তমান এমডি মো. ফজলুল হক মোর্শেদ। ঐ সংবাদ সম্মেলনে কাকলির বিভিন্ন দোকান কোটা বিক্রিসহ আরও নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন জাবেদের বিরুদ্ধে যার জবাব এখনো দেননি তিনি।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নগরীর শামীমাবাদ এলাকার জনৈক জাবেদ আহমদও প্রতারণার মামলা করেছিলেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মুজিবুল হক জাবেদের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে চারদিকে খবর ছড়িয়ে পড়ে।
আবার বুধবার ( ১৯ জানুয়ারি ) দুপুরের দিকে থানা পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে- এমন খবরও রটে যায়।
তবে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার মল্লিকা জানান, মঙ্গলবার রাতে মুজিবুল হক জাবেদ নামে কাউকে গ্রেফতার হয়নি। আর যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের সবাইকে আদালাতে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। মঙ্গলবার যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সবাইকে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার করে থানা থেকে আবার ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি স্রেফ গুজব। এমন কোন ঘটনা অন্তত আমি দায়িত্ব নেয়ার পর ঘটেনি।
তিনি গুজবে কান না দিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানান।
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে মুজিবুল হক জাবেদের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। একবার তার ছেলে রিসিভ করে গ্রেফতারের বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন।
উল্লেখ্য, জাবেদের বিরুদ্ধে তার চাচাত ভাই ফজলুল হক মোর্শেদ ও এনামুল হক খোর্শেদ সম্প্রতি কাকলি শপিং সেন্টারের সামনে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের উপর হামলা এবং এই মার্কেট দখলে নানা হুমকি ধমকির অভিযোগে সিলেটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করেছেন।
মোর্শেদসহ অন্যান্যরা জানিয়েছেন, জাবেদকে তার অসততার প্রমাণ পেয়ে মার্কেটের দায়িত্ব থেকে তাদের বাবা চাচারাই অপসারণ করেছেন। বর্তমানে মার্কেটের কোন দায়িত্বে নেই তিনি। কিন্তু তবু কবির আহমদ, শিপন খানসহ কয়েকজন অসৎ ব্যবসায়ীর সাহায্যে তিনি কাকলি শপিং সেন্টার দখলে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আর শামীমাবাদ এলাকার জাবেদ আহমদ জানিয়েছেন, মুজিবুল হক জাবেদ তার দায়েরকৃত প্রতারণা মামলায় একজন ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী। তিনিও গ্রেফতারের বিষয়টি কেবল শুনেছেন।
তিনি অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।