স্টাফ রিপোর্ট:: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যারা সহমত পোষণ করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু যারা এ আন্দোলনকে ইস্যু মনে করে বিক্ষোভ করছেন, তাঁদের দ্বারা সৃষ্ট সহিংসতার দায় নেবেন না আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
২৩ জানুয়ারি, রোববার সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সেই সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের একমাত্র দাবিতে অনড় আছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের একটাই দাবি, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের অপসারণ।
শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে ভার্চুয়াল আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, তাঁরা তাঁদের দাবিতে এখনো অনড়। রোববার সকালে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ফের আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৬ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। নতুন করে আরও তিনজন যুক্ত হয়ে এখন ১০ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ভার্চুয়াল আলোচনা শুরু করেন শিক্ষামন্ত্রী। রাত ২টা ২০ মিনিটে বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
সভা শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘ এক ঘণ্টা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের বলেছেন, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অনশন ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো নিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দিতেও বলেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা আজ রোববার সকাল পর্যন্ত সময় নিয়েছেন।
তাঁরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের সিদ্ধান্ত শিক্ষামন্ত্রীকে জানাবেন। উপাচার্যকে অপসারণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে নাদেল জানান, ‘এ ব্যাপারে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’
উল্লেখ্য, শনিবার দিবাগত রাত ১টায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে আলোচনায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন যুক্ত হন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্দোলনকারী দুজন ও আমরণ অনশনকারী দুজনসহ মোট চারজন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দীপু মনি শাবি শিক্ষকদের এক প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের আলোচনার আহ্বান জানান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসতে রাজি হন। তাঁরা অনলাইনে অথবা শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধি পাঠালেও তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে সম্মতি জানান।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যম হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আসেন।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন শাহরিয়ার আবেদিন, অপূর্ব, মীর রানা, সাব্বির, নাফিসা আঞ্জুম ইমু, রোমিও, উমর ফারুক, ইয়াসির সরকার, সাদিয়া আফরিন ও মোহাইমিনুল বাশার রাজ।