• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

শাবি ভিসিকে আজকের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান সংসদে

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৩, ২০২২
শাবি ভিসিকে আজকের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়ার আহ্বান সংসদে

ডেস্ক রিপোর্ট::
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে (ভিসি) আজকের মধ্যে সরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জাতীয় সংসদে। সেই সঙ্গে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের ঢাকায় এসে আলোচনার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর আহ্বানের সমালোচনাও করা হয়েছে।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অদিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ ও পীর ফজলুর রহমান এ সমালোচনা করেন।

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘আজ ১১ দিন যাবৎ একটি খবর পত্রিকার পাতায় এবং টেলিভিশনে আসছে। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন পদত্যাগের দাবিতে। ১১ দিন ধরে তারা অনশনে আছেন। ১৬ জন এরই মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

‘শুনলাম শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তোমরা তোমাদের দাবিদাওয়া রেখে ঢাকায় আসো। আমরা সবাই ছাত্র আন্দোলন করেছি। আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে ছাত্ররা কারও সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় আসবে না।’

তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীর উচিত ছিল ওখানে যাওয়া। মোনায়েম খান বহুবার আমাদের বঙ্গভবনে ডেকেছেন, আমরা যখন ছাত্র ছিলাম বঙ্গভবনের দাওয়াত আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা কখনো কোনো আন্দোলন করতে গিয়ে বঙ্গভবনে দাওয়াত খেতে যাইনি। ছাত্ররা কেন আসবে আপনার কাছে? প্রত্যেকটা ছাত্র আন্দোলন এ দেশে হয়েছে যৌক্তিকভাবে। যখনই যারা সরকারে থাকে, তারা আন্দোলনকে অযৌক্তিক মনে করে।

‘ভিসি কোনো স্থায়ী পদ না যে একজন ভিসি চলে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। ভিসিকে অপসারণের দাবিতে ছাত্ররা যদি অনশন করে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু নেই। তাহলে বুঝতে হবে, এই ভিসির ওপর তাদের কোনো বিশ্বাস নেই, আস্থা নেই, ভালোবাসা নেই, শ্রদ্ধাবোধ নেই। এটা থাকাও উচিত না। ওনার যদি বিন্দুমাত্র আত্মসম্মানবোধ থাকত, তাহলে উনি এভাবে বসে থাকতেন না।’

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘দাবি নিয়ে ছাত্ররা ভিসির কাছে গিয়েছিল, তিনি তাদের কথা শোনেননি। শিক্ষার্থীরা তখন আন্দোলনে এলো। এই আন্দোলনে পুলিশ ডেকে আনল। এটা কি আইয়ুব খান, মোনায়েম খানের যুগ নাকি যে কথায় কথায় পুলিশ আনবেন। ভিসি ছাত্র-ছাত্রীদের মারল, আমরা দেখলাম। লাঠিপেটা করল। কেন এটা করল? কোনো ছাত্র আন্দোলনকেই ছোট করে দেখা উচিত না।

‘আমি মনে করি, অবিলম্বে আর কোনো তদন্ত রিপোর্ট নয়, আলাপ-আলোচনা নয়, শিক্ষামন্ত্রী আছেন, প্রধানমন্ত্রী আছেন। ভিসিকে আজকের মধ্যে ওখান থেকে উইথড্র করে নিয়ে আসেন। ছাত্রদের ক্লাসে ফিরে যেতে সাহায্য করেন।’

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমানও একই দাবি তোলেন। তিনি বলেন, ‘সিলেটের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে লাগাতার আন্দোলন চলছে। ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হওয়ার পরও তিনি অভিভাবক হিসেবে ছাত্রদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা না করার কারণে একপর্যায়ে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যায়।

‘শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন। কিন্তু এই ভিসি নির্লজ্জের মতো, সব আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে বসে আছেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাকে চায় না, কিন্তু তিনি একটি লক্ষ্মীন্দরের বাসার মতো তার বাসাকে বানিয়ে সেখানে আছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন না।

‘এ অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রীও আলোচনার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হচ্ছে। ভিসি কীভাবে বাসায় থাকেন? তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে সরকারের উচিত তাকে আজকের মধ্যে অপসারণ করে শিক্ষার্থীদের হলে ফিরে যেতে সাহায্য করা।’