
তাহিরপুর প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া এলাকায় ‘মেসার্স দ্বীন ইসলাম এন্টারপ্রাইজ’ নামক একটি কয়লার ডিপো থেকে জোরপূর্বক প্রায় ১৫০ টন কয়লা লুট করে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী খন্দকার মঞ্জুর আহমদের ভাগনা আব্দুস সালামের নেতৃত্বে তার সহযোগীদের একটি দল প্রকাশ্যে এই কয়লা লুট করেছে। ৭ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাত ১০.৩০টার দিকে স্থানীয় বড়ছড়ায় এই ঘটনাটি ঘটে।
মেসার্স দ্বীন ইসলাম এন্টারপ্রাইজের মালিক দ্বীন ইসলাম তাহিরপুর উপজেলার লাকমা গ্রামের মোঃ সাফিল মিয়ার পুত্র। সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতার জেরধরে সৃষ্ট বিরোধ থেকে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন ৭ ফেব্রুয়ারি ‘১নং শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদ’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন স্থানীয় প্রভাবশালী খন্দকার মঞ্জুর আহমদের ভাগনা আব্দুস সালাম এবং ব্যবসায়ী দ্বীন ইসলামের পিতা মোঃ সাফিল মিয়া। নির্বাচনের শুরু থেকেই উভয় প্রার্থীর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। খন্দকার মঞ্জুর আহমদ তার ভাগনাকে বিজয়ী করতে নিজ প্রভাব খাটিয়ে মোঃ সাফিল মিয়াকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হন। পরে ঘটনার দিন ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মোঃ সাফিল মিয়া বিজয়ী হন। নির্বাচনে পরাজয়ের ক্ষোভ থেকে প্রতিশোধ নিতে খন্দকার মঞ্জুর আহমদের নির্দেশে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ঘটনার দিন রাত ১০.৩০টার দিকে আব্দুস সালাম তার সহযোগী রাজু খন্দকার, রতন মিয়া ও কামরুলকে নিয়ে দ্বীন ইসলামের মালিকানধীন ‘মেসার্স দ্বীন ইসলাম এন্টারপ্রাইজ’ নামক কয়লার ডিপোতে যায়। তাদের সাথে অস্ত্রশস্ত্র ছিল এবং কয়লা বহনকারী গাড়ি ও শ্রমিক ছিল। এসময় ডিপোতে দ্বীন ইসলাম বা তার পিতা কেউ উপস্থিত ছিলেন না। আব্দুস সালাম সঙ্গে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে জোরপূর্বক ঐ ডিপোতে ঢুকে কয়লা লুট করে তাদের গাড়িতে তুলে। এসময় ডিপোতে থাকা দ্বীন ইসলামের কর্মচারী বাধা দিতে গেলে তাকে হুমকী দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আটকে রাখে আব্দুস সালামের সহযোগী ক্যাডাররা। তারা প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা মূল্যের ১৫০ টন কয়লা লুট করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে দ্বীন ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নির্বাচনে আমার বাবার কাছে পরাজিত হয়ে চোরাকারবারী এই চক্র উন্মাদ হয়ে গেছে। তারা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই আমি ও আমার বাবাকে মারার জন্য নানাভাবে হুমকী দিচ্ছে। আমাদেরকে না পেয়ে হিংসা পরায়ণ হয়ে তারা অন্যায় ও বেআইনী ভাবে পেশীশক্তির জোরে আমার ডিপো থেকে প্রায় ১৫০টন কয়লা লুট করে নিয়ে গেছে। এসকল কাজের মুলহোতা খন্দকার মঞ্জুর আহমদ। তাদের ভয়ে আমরা এখন নিজেদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আতংকের মধ্যে রয়েছি।