নিজস্ব প্রতিবেদক::
সিন্ডিকেটদের কবল থেকে ভোক্তাদের রক্ষা করতে ও পবিত্র মাহে রমজানকে সামনে রেখে সিলেটে নগরীতে শুরু হয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর পণ্য বিক্রি।
রোববার (২০ মার্চ) সকাল থেকে একযোগে সিসিক’র ১৪টি ওয়ার্ডে এবং সিলেটের ১৩টি উপজেলার ৪৪টি স্থানে শুরু হয় এই পণ্য বিক্রি। সকাল থেকে টিসিবির ট্রাক বিক্রি করছে পণ্য। নগরীর প্রতিটি ট্রাকের পেছনে ক্রেতাদের লম্বা সারি দেখা যা। খরা রোদে লাইনে দাঁড়িয়েও কম দামে পন্য ক্রয় করতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
টিসিবির পণ্য কিনতে আসা এক নারী জানান, পাড়ার একটি ট্রেইলারের দোকানে কাজ করে সংসার চালাই। প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও আমাদের মজুরী বাড়ে না। তাই দোকান থেকে ছুটি নিয়ে টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়েছি, যাতে কিছুটা হলেও কম টাকায় জিনিসপত্র কিনতে পারি।
রিক্সাচালক মুজাক্কির আলী বলেন, সরকারকে ধন্যবাদ জানাই কম টাকা পন্য ক্রয় করার ব্যবস্থা করে দেওয়ায়। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের তো টাকার অভাব নেই। এভাবে সারা বছর টিসিবি পন্য বিক্রি করলে আমাগো মতো গরীব লোকজন কম টাকা জিনিসপত্র কিনতে পারতো।
এর আগে শনিবার (১৯ মার্চ) সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান সংবাদ করে জানিয়েছিলেন, ‘ফ্যামিলি কার্ড’র মাধ্যমে আজ থেকে পুরো বিভাগের ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫২১টি পরিবার টিসিবি’র পণ্য কিনতে পারবে।
জানা যায়, টিসিবি’র ট্রাক থেকে প্রতিজন ১১০ টাকা প্রতি লিটার দামে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৫৫ টাকা প্রতি কেজি দামে ২ কেজি চিনি ও ৬৫ টাকা প্রতি কেজি দামে ২ কেজি মসুরের ডাল কিনতে পারবেন। সুবিধাভোগীরা ‘ফ্যামিলি কার্ড’র মাধ্যমে মাসে দুইবার এই সুবিধা পাবেন।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, আপাতত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১৪টি ওয়ার্ডে (১ থেকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড) টিসিবি’র পণ্য পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে অন্যান্য ওয়ার্ডেও পাওয়া যাবে এসব পণ্য। সিটি কর্পোরেশনের ১৪টি ওয়ার্ডের ১৮টি স্থানে ও ১৩টি উপজেলার ৪৪টি স্থানে একযোগে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে। সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা মনিটরিং টিমও গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার মোট ৪৫ হাজার পরিবার টিসিবি’র পণ্য পাবেন। তাদের জন্য বরাদ্দ থাকবে মোট ৯০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ৯০ হাজার মেট্রিক টন চিনি ও ৯০ হাজার মেট্রিক টন মসুরের ডাল। আর সিলেট জেলার ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩৬৩ পরিবার পাবে মোট ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭০০ লিটার সয়াবিন তেল, ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চিনি ও ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন মসুরের ডাল।
এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার ৭২ হাজার ৪২৬টি, সুনামগঞ্জ জেলার ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৯১২টি ও হবিগঞ্জ জেলার ৯১ হাজার ৮২০টি পরিবার টিসিবি’র পণ্য পাবে বলে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক আরও জানান, টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে থাকবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে মনিটরিং টিম। এছাড়াও মাঠে থাকবে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষে ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে পৃথক মনিটরিং টিম। এদিকে, টিসিবি’র পণ্য বিক্রি উপলক্ষে আজ সকাল থেকেই নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে কার্ডধারী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাছুদিঘীরপাড়ে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।