• ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জাফলংয়ে হামলাকারী ৫ জনকে আদালতে প্রেরণ

admin
প্রকাশিত মে ৬, ২০২২
জাফলংয়ে হামলাকারী ৫ জনকে আদালতে প্রেরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক::
জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলাকারী ৫ জন স্বেচ্ছাসেবককে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৬ মে) দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, হামলায় আহত সুমন সরকার বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা (নং-০৮(৫)২২) দায়ের করেছেন।

মামলার আসামীরা হলেন, গোয়াইঘাটের পন্নগ্রামের মৃত রাখা চন্দ্রের ছেলে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস (২১), ইসলামপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মো. সেলিম আহমেদ (২১), নয়াবস্তি এলাকার ইউসুফ মিয়ার ছেলে সোহেল রানা, পশ্চিম কালীনগর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও ইসলামপুর রাধানগর গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দীনের ছেলে জয়নাল আবেদীন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই দফায় তাদেরকে আটক করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ঈদ উপলক্ষে সিলেটের জাফলংয়ে বেড়াতে আসা ঢাকার একটি পরিবারের উপর টিকেট ফি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় স্বেচ্ছাসেবকরা। এ দলে ৮ নারী ও শিশুসহ তারা ১২ জন ছিলেন। বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে কাউন্টারে এক শিশুর টিকিট কেনাকে কেন্দ্র করে তাদের সঙ্গে কাউন্টারের স্বেচ্ছাসেবকদের বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে কাউন্টারে থাকা উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক লাঠি, কাঠের টুকরো ও লোহার পাইপ দিয়ে পর্যটকদের বেধড়রক মারধর শুরু করেন। তখন পাশে থাকা এক তরুণী ও কোলে শিশুবাচ্চা নিয়ে এক নারী হামলা থামানোর চেষ্টা করলে তারাও হামলার শিকার হন।

এসময় নারীদের শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন হামলার শিকার পর্যটকরা। হামলায় ৬ নারী-পুরুষ আহত হন। পরে তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ঘটনার দিন রাতেই হামলার শিকার পর্যটকরা ঢাকায় ফেরেন। ঘটনার পর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার ভিডিও এবং ছবি মুঠোফোনে ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা প্রশাসন ও জাফলং সাব জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক ঘটনাস্থলে যান। পরে হামলাকারী ৫ স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেফতার করে গোয়াইনঘাট থানাপুলিশ। হামলার ঘটনায় আহত সুমন নামের এক পর্যটক বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

ঢাকার কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর জুরাইন এলাকার সম্রাট সরকার বলেন, টিকিট ছাড়া পর্যটন কেন্দ্রে ঢোকা যাবে না বলেই নারীদের শরীরে হাত দেয় হামলাকারী স্বেচ্ছাসেবকরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা নারী-পুরুষদের উপর হামলা করে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবকরা। তিনি বলেন, আমরা ঘটনার পর পরই ৯৯৯-এ কল করে সহযোগিতা চেয়েও পাইনি। আমাদের মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে জানালে ৯৯৯-এর ফোন রিসিভকারী পুলিশ মাথা ফাটানোর ছবি পাঠাতে বলেন।

হামলায় তাদের অনেকে আহত হলেও সুমন নামে একজনের অবস্থা গুরুতর জানিয়ে সম্রাট বলেন, তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাবেন। এখানে কোনো হাসপাতাল তাকে ভর্তি করতে চান না। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হামলার শিকার বিথি সরকার বলেন, আমরা মেয়ে হয়েও হামলাকরীদের আটকাতে চেষ্টা করি। হামলার সময় তাদের একটাই কথা ছিলো- ‘মেরেই ফেলবো’। আমাদের জামা-কাপড় খুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে হামলাকারী।

পশুর মতো আচরণ করেছে তারা। আহত সুমনের স্ত্রী সুমি সরকার বলেন, তারা আমার দেবর ও স্বামীকে মারপিট করছিল। সন্তান কোলে নিয়ে কাকে বাঁচাবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

তারপরও হামলাকারীদের আটকানোর চেষ্টা করি। ওরা এসএস পাইপ ও কাঠ দিয়ে আমার স্বামীর মাথায় আঘাত করে। সৃষ্টিকর্তা অল্পের জন্য রক্ষা করেছেন, তিনি মারাই যেতেন।