
রাজনগর প্রতিনিধি : রাজনগর উপজেলা শহরে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষে ২ পুলিশ কনস্টেবল সহ ৮ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২২ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলা ৩টায় উপজেলা শহরের উত্তরবাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপে¬ক্সের সম্মুখে এই ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাজনগর বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১১ জনকে আসামী করে থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছে।
জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রাজনগর বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনার দিন ২২ নভেম্বর উপজেলা শহরে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উত্তরবাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কপে¬ক্সের সম্মুখে এসে বেলা প্রায় ৩টায় পথসভায় মিলিত হয়। এ সময় রাজনগর থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে বাধা দেয়। এতে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাদের বাকবিতন্ডা ঘটে। এক পর্যায় পুলিশ জোরপূর্বক তাদের ব্যানার ও হ্যান্ড মাইক কেড়ে নিতে গেলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ মিছিলকারী বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাঠকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায় ঘটনাস্থলের পাশে রক্ষিত পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত একদল পুলিশ এসে বিএনপির লোকজনকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৪জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলা বিএনপি নেতা শিপন মিয়া, রাজনগর উপজেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেন পাপ্পু, যুবদল নেতা রাব্বি আহমদ ও ইফতেখার হোসেন। সংঘর্ষে ২ পুলিশ কনস্টেবল ও বিএনপির ৬জন সহ মোট ৮জন আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ কনস্টেবল (৫০৯) হায়দার আলী ও (২৯৮) রহিম আহমদ কে উদ্ধার করে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে প্রেরণ করা হয়েছে। বিএনপির আহতদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এই ঘটনায় রাজনগর থানার এসআই যিশু দত্ত বাদী হয়ে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১১জনকে আসামী করে থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ০৫, তারিখ ২২/১১/২০২২ইং। গ্রেফতারকৃত বিএএনপির ৪ নেতাকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন, রাজনগর উপজেলার কাছাড়ী গ্রামের সজিব মিয়ার পুত্র শিপন আহমদ (৫০), কাছাড়ী গ্রামের মোঃ ছমির মিয়ার পুত্র কামাল হোসেন পাপ্পু (২৩), মজিদপুর গ্রামের মঈন উদ্দিনের পুত্র রাব্বি আহমদ (৩০), পাঁচগাও গ্রামের আমির হোসেনের পুত্র্র ইফতেখার হোসেন (৩০) বান্নি গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের পুত্র শামই ইসলাম (২২), একমধু গ্রামের হাবীবুর রহমানের পুত্র জামিল আহমদ (৪০), মজিদপুর গ্রামের আব্দুল করিমের পুত্র শাওন আহমদ (২৮), ডেফলউরা গ্রামের মৃত আব্দুল মুকিতের পুত্র আব্দুল হেকিম (৪৭), রাঙ্গিছড়া গ্রামের আব্দুল মন্নানের পুত্র মারুফ আহমদ (২০), একমধু গ্রামের নাজিম উদ্দিনের পুত্র মুমিন আহমদ (২০) ও মজিদপুর গ্রামের আব্দুর রবের পুত্র তারেক আহমদ (৩২)।
এ বিষয়ে রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপির লোকজন অনুমতি ছাড়া মিছিল-মিটিং করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় পুলিশ জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দিতে তাদেরকে বাধা দিলে তারা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের হামলায় থানার ২ পুলিশ আহত হয়েছে, পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার সাথে জড়িত ৪জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় থানায় পুলিশ এসল্ট মামলা হয়েছে। পুলিশ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে।