বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনৈতিক অবস্থানকে যতটা ক্রমশ শক্তিশালী করে চলেছে, মূলত তার সম-পর্যায়ে আর কোনো কিছুই হতে পারেনা। অথচ সেই চরম দুর্ভাগা প্রবাসীরা দেশে ফেরত আসাকালীন সময় প্রতিনিয়ত বিমানবন্দরে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তাদের অসদাচরণ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে নানান হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যাত্রীদের দুঃখ, দুর্দশার কথায় রয়েছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার সিলেট ২ সপ্তাহের সফর শেষে আসার পথে যখন সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিয়ে সিলেট থেকে যুক্তরাজ্য যাচ্ছিলেন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাওলানা মাহবুবুর রহমান জামিল। তাঁর সাথে বিমানবন্দরে কর্মকর্তার অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে।
তিনি জানান, বিমানবন্দরে ভিতরে আমার মালামাল দিয়ে বর্ডিং কার্ড করলাম তখন আমার হাতের ব্যাগ ওজন করা হয় নাই, যে কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন তিনি আমাদের হাতের ব্যাগের ওজন সম্পর্কে কোন কিছু জিজ্ঞেস করে নাই।
আমার সাথে আমার বৃদ্ধা রোগাকান্ত মা হুইল চেয়ারে ছিলেন। যখন বর্ডিং কার্ড নিয়ে ইমিগ্রেশন লাউঞ্জে ঢুকতে রওয়ানা দিলাম তখন একজন কর্মকর্তা ওখানে স্কেল নিয়ে বসে আছে হাতের ব্যাগ ওজন করার জন্য। তাদের নিয়মানুযায়ী আমাদের হাতের ব্যাগগুলো ওজন দিয়ে বলেন আমাকে ১৭ কেজি ওজনের টাকা দিতে হবে, কারণ ২ ব্যগ নাকি ১৭ কেজির উপরে হয়ে গেছে। বিমাবন্দরের কর্মকর্তা বলেন আমাদের ২ জনে ১৪ কেজি ৭ কেজি করে একজন যাত্রী নিতে পারবে।
আমি ওদেরকে অনেক অনুরোধ করে বলছি আমার বৃদ্ধা রোগাকান্ত মাতা আমার সাথে উনার ওষধ এবং শীতের কাপড় ব্যাগের ভিতরে এজন্য একটু বেশি হয়ে গেছে। কিন্তু কর্মকর্তারা বলেন আমি ৩ কেজি বাড়তি ওজনের টাকা না দিলে তারা আমাকে ঢুকতে দিবে না। তখন তাদের সাথে কিচ্ছু উচ্চ বাক্য হয় এবং আমি আমার মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও রেকর্ড শুরু করি এবং ম্যানেজারকে নিয়ে আসার অনুরোধ করি। আমাকে আনুমানিক ১০ মিনিট বাহিরে আটকে রাখার পর একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেন ভিডিও গুলো মুছে ভিতরে চলে যান। আপনার ৩ কেজি অভার মালের কোন টাকা দেওয়া লাগবে না। যেহেতু আমার রোগাকান্ত বৃদ্ধা মা আমার সাথে সম্মত হয়ে গেলাম। তাদের মধ্য থেকে একজন আমার মোবাইল থেকে ভিডিও গুলো মুছে ফেলল। গত রবিবার (১৯ ফেব্রয়ারি) সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দিলগ্রামের মাওলানা শায়খ আব্দুল কাইয়ুম রহঃ এর ছেলে মাওলানা মাহবুবুর রহমান জামিল এসব ঘটনা ঘটে।
মাওলানা মাহবুবুর রহমান জামিল বলেন, বিশ্বের এমনিক শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরেও লাগিজের সাথে হেন্ড লাগিজ ওজন করা হয়। কোন কম বেশি হলে হেন্ড লাগিজের মালামাল লাগিজে দিয়ে দিলে সমাধান হয়ে যায়।
ইমিগ্রেশন লাউঞ্জের আগে চেক বসিয়ে হেন্ড লাগিজ ওজন করার উদ্দেশ্য কি? আমরা যখন লন্ডনের বিমানের এজেন্ট টিকিট ক্রয় করি তখন তারা আমাদেরকে বলে দেয় ৮ কেজি হেন্ড লাগিজ এলায়েন্সে সিলেট থেকে লন্ডনে আসার সময় ৭ কেজি হয় কিভাবে?
অথচ আমরা লন্ডন থেকে যাওয়ার সময় ৮ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত হাতের ব্যাগে নিতে পারি। আমি বিশ্বের অনেক দেশ ভ্রমন করেছি এবং অনেক এয়ারলাইন্সে যাতায়াত করেছি। সব এয়ারলাইন্স সর্বনিম্ন ৮ কেজি হাত ব্যাগের ওজন গ্রহনযোগ্য করে এমনকি ঢাকা এয়ারপোর্টেও ৮ কেজি হাত ব্যাগের ওজন গ্রহনযোগ্য।
সিলেট এয়ারপোর্টে ৭ কেজি ওজনের ওজনটা কে বসালো এবং কি জন্য বসানো হল এইটা আমাদের সম্মুখে পরিস্কার। আমার সাথের অনেক বৃদ্ধা, রোগাকান্ত, ডায়াবেডিস রোগি রাস্তার জন্য সামান্য খাওয়া নিয়ে এসেছিলেন, ওদের কাছেও বিমানবন্দরের কর্মকর্তা টাকা চেয়েছে ডায়াবেডিস রোগির কাছে। আবার কোন কোন যাত্রী খানা গুলা বাহিরে গিয়ে আত্বীয়স্বজনের কাছে দিয়ে এর পরে ইমিগ্রেশন লাউঞ্জে ঢুকেছেন। তাদেরকে টাকা দেন নাই।
মাওলানা মাহবুবুর রহমান জামিল আরো বলেন, সিলেটের প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সিলেটের সর্বস্তরের জনগণের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যে আমাদের সিলেট এয়ারপোর্টে এই সমস্ত কি হচ্ছে? আপনাদের অবশ্যই জানা আছে। এই সমস্ত কারণে আমরা লন্ডন প্রবাসীর সন্তানেরা বাংলাদেশ ভ্রমন করতে অনিহা প্রকাশ করে। আমাদের সন্তানদের বাংলাদেশ মুখি করতে সমস্ত সমস্যার সমাধান একান্ত প্রয়োজন।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302