নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন দলনিরেপক্ষ তদারকি সরকার গঠনসহ ৩দফা দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (২৬ মে) বিকাল ৫টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সিলেট জেলা বাসদ আহ্বায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন বেলাল আহমদ, শহীদ মিয়া, নুরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, দীলিপ তালুকদার, জাহেদ আহমদ প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাধারণ মানুষের জীবন দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে চরমভাবে বিপর্যস্ত চাল, বিল, পিঁয়াজ, তেল, চিনি, ডাল, ময়দা, মশলাসহ নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। দ্রব্যমূল্যের এই পাগলা ঘোড়া কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ নির্মাণে জনগণের আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তথাকথিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে অনুগত নির্বাচন কমিশন নিয়োগের পর বহু বাগাড়ম্বর করলেও তাদের অধিনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনসমূহে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে উপর্যুপরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জনগণের আস্থা যে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি নাই তার প্রমাণ ভোট কেন্দ্রে জনগণের অত্যন্ত কম উপস্থিতি।
তাছাড়াও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গণনার সময়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে একটি টেলিফোন কল যাওয়ার পর ভোট গণনা কিছুক্ষণ স্থগিত রাখা ও ফলাফল পাল্টে যাওয়া নিয়ে জনমনে বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামে ইভিএম মেশিন বুথের বাইরে নিয়ে যাওয়া, গাইবান্ধা উপনির্বাচনে বুথে ডাকাত চিহ্নিত করার পর ভোট স্থগিত করা হলেও কাউকে বিচারের মুখে এনে শাস্তি দিতে না পারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উকিল সাত্তার মার্কা নির্বাচন ইত্যাদি প্রমাণ করে বর্তমান দলীয় সরকারের অধিনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন মোটেও অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করা কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়। এ প্রেক্ষাপটে যখন বাম জোটসহ সকল বিরোধী দল বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে তখন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রহসনের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আয়োজন দূরভিসন্ধিমূলক ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার সামিল।
বক্তারা প্রহসনের সিটি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের উচ্ছেদ ও নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধিনে নির্বাচন অনুষ্ঠান, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারসহ ভোট, ভাত ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সামিল হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান।