
সদস্য, জাতীয় পার্টি, সিলেট জেলা
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘ ১৪ বছরের শাসনামলে প্রতিদিন শতশত রাজনৈতিক দলের নেতাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের রক্ষিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে হাজার হাজার রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আটক, গুম, খুন অব্যাহত রেখেছে। একতরফা ভাবে দেশ এভাবে চলতে থাকলে দেশে গৃহযুদ্ধ হওয়ার আশংকা তৈরি হবে। ক্ষমতাসীন দলের নির্যাতন নিপীড়নে বাদ যায়নি স্থানীয় নেতাকর্মীরাও সে সুবাদে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার আমার উপর একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। আমি জাতীয় পার্টি’র রাজনীতি করার জন্য আমাকে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে। আমি শুধুমাত্র আমাদের মরহুম নেতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের হাতে গড়া বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়ায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা একাধিকবার আমার উপর হামলা, মামলা ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিল।বিগত ২০২১ সালের ১৬ মে আমি জাতীয় পার্টির একটি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছিলাম, এই সভায় আমি আমার বক্তব্যে অবৈধ সরকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। সভা শেষ করে আমি বাড়ি ফেরার পথে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার উপর হামলা চালায়। সেই হামলায় খাদিমনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তারা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালিকের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। তাদের হামলায় আমি গুরুতর আহত হই। হামলাকারীদের হামলায় আমার বুকের হাড় ভেঙে যায়, কোমরের নিচের অংশে গুরুতর আঘাত করে আমাকে মৃত ভেবে ফেলে যায়। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হাসপাতালে পাঠান। আমি দীর্ঘ ২০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। এর আগে খাদিমনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তারা মিয়া ২০২১ সালের ২৬ শে মার্চ একটি অনুষ্ঠানে টাকা দেওয়ার জন্য আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে চাঁদা দাবী করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সভাপতি তারা মিয়াসহ তার সন্ত্রাসীরা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালায়। এসময় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরপর ২০২২ সাল ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বেদনাদায়ক ও কষ্টকর। আমাকে রাজনীতি থেকে দুরে রাখতে ক্ষমতাসীন দল আমার উপর একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করে। বছরের পুরো সময় আমাকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে থাকতে হয়। আওয়ামী পুলিশ, র্যাব আমার বাড়িতে গিয়ে তল্লাশির নামে লুটপাট চালায়। আমাকে না পেয়ে আমার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের ভয়ভীতি ও হয়রানী করে। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ বাহিনী আমার অনেক নেতাকর্মীর উপর শারিরীক নির্যাতন করে। এভাবে এসব নির্যাতন আর চলতে দেওয়া যায়না, আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এ অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হলে, রাজপথে নেমে আন্দোলন ছাড়া আরো কোনো বিকল্প নেই।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের ১৭ তারিখে আমাকে হাত পা বেঁধে অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেই সময় আমার পরিবারের উপর নেমে আসে চরম হতাশা। অপহরণকারীর কবল থেকে আমাকে জীবিত উদ্ধার করতে পুলিশের কাছে আমার স্ত্রী গেলেও পুলিশের নিকট থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। পরে আমার পরিবার নিরুপায় হয়ে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে আমাকে উদ্ধার করে। অপহরণকারীরা টাকা পেয়ে আমার হাত পা বাঁধা অবস্থায় আমাকে অজ্ঞান করে আমার বাড়ির পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। সে সময় আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমি হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর বাড়িতে ফিরে আসি। এই বিষয়ে আমি একাধিকবার থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলেও পুলিশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। উল্টো আমাকে এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানার ওসি মঈন উদ্দিন শিপন, পুলিশের এসআই পলাশ চন্দ্র দাস, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ ও ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ ছত্রীসহ আরো অনেকে আমার কাছে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবী করে। আমার অপরাধ আমি বিরোধী দলিও রাজনীতি করি। আমি রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত। আমি যতদিন বাঁচব সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের হাতেগড়া পতাকাবাহী গণতন্ত্রমুখী রাজনীতির দল জাতীয় পার্টির একজন সাধারণ কর্মী হয়ে আজীবন বেঁচে থাকবো। আমার জীবনের নির্যাতনের কথা সকলের সামনে তুলে ধরলাম। আসুন আমরা সবাই মিলে এই স্বৈরাচারী অবৈধ শেখ হাসিনার সরকারের খুন, ঘুম, দুর্নীতি, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।