• ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বিএনপির ডাকা হরতালে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ১৭

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২৯, ২০২৩
বিএনপির ডাকা হরতালে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ১৭

অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে এবং সরকার পতনের একদফা দাবীতে আজ রোববার সারা দেশের ন্যায় সিলেট বিভাগেও সকাল-সন্ধা হরতাল পালন করা হয়েছে। গতকাল ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনের সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে এ হরতাল আহবান করে বিএনপি। হরতালে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাংচুর ও সংঘর্ষ হয়। এরমধ্যে সিলেট বিভাগের সিলেট নগরী, দক্ষিণ সুরমা, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের একাধিক স্থানে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হরতাল চলাকালে পুলিশ সিলেট নগরী থেকে ৮ জন, হবিগঞ্জ থেকে ৭ জন ও সুনামগঞ্জ শহর থেকে ২ জনকে গ্রেপ্তার করে।

জানা গেছে- বিএনপি আহুত আজকের হরতালের সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে পিকেটিং শুরু করে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের লালাবাজার, হবিগঞ্জের বাসস্টেন্ড এলাকা ও সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের জাউয়াবাজারসহ কয়েকটি স্থানে নেতাকর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিতে দেখা গেছে। একই সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও হরতালের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রাজপথে তৎপর ছিল। উভয় দলের কর্মীরা মুখোমুখি হলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ২০-২৫ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

হরতালের শুরুতে সিলেট নগরীর উপশহরের মুখ এলাকায় গাড়ি ভাংচুর, দক্ষিণ সুরমা ও আম্বরখানা এলাকায় মিছিল ও পিকেটিং করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৮ নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরা হলেন মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংকি, সদস্য ইমরান আহমদ, ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল ফাহিম, ইমরান হোসেন, ‍যুবদলের নাদিম আহমদ, ওয়াহেদুল ইসলাম শহিদ, ছাত্রদলের জুবায়ের আহমদ ও আব্দুল মান্নান। এছাড়া দক্ষিণ সুরমার বাস টার্মিনাল এলাকায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক বদরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সুহেল ইবনে রাজা গুরুতর আহত হন।

এদিকে সুনামগঞ্জ শহরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক খায়রুল হুদা চপলের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ দুপুরে পৌর পয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া জেলার ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজার এলাকায় ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নের যুবদল সভাপতি হেলাল আহমদের নেতৃত্বে যুবদল নেতা সুহান, লায়েক আহমদ, মনসুর আলমসহ প্রায় ২০-২৫ জন নেতাকর্মী পিকেটিং ও সড়ক অবরোধ করেন। ওই সময় বিভিন্ন গাড়ি ভাংচুর করে যুবদলের নেতা-কর্মীরা। একই সময় হরতালের বিপক্ষে ছাতক উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল আহমদ ও সভাপতি মুরাদ হোসেনের নেতৃত্বে যুবলীগের নেতাকর্মীরা জাউয়া বাজারে অবস্থান নেন। রাস্তাবন্ধ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার কারণে ওই সময় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, মাহফুজ বাবলু, আমতর আলীসহ কয়েকজন বাধা দেন। এ নিয়ে সড়ক অবরোধকারী যুবদল সভাপতি হেলাল আহমদ, যুবদল নেতা লায়েকসহ অন্যদের সাথে মারামারি হয়। এক পর্যায়ে যুবলীগ কর্মীদের ধাওয়া খেয়ে যুবদল নেতারা পালিয়ে যান বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। দুপুর একটার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

এছাড়া হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক আব্দুল হাশিমের নেতৃত্বে বেলা ১১টার দিকে হরতালের সমর্থনে মিছল বের করলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাতে বাধা দেন। ওই সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ৫-৭ জন আহত হন। পুলিশ ৭ জনকে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে বলে সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়া সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে পাল্লা পাল্টি মিছিল সমাবেশের খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজান শফিউর রহমান জানান, হরতারের পক্ষে বিপক্ষে কয়েকটি স্থানে ঝামেলা হয়েছে। কয়েকটি গাড়িও ভাংচুর হয়। নাশকতার অভিযোগে পুলিশ ১৭ জনকে আটক করেছে। বড় ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান ডিআইজি।