বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি : সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরশহরে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষে ২ পুলিশ কনস্টেবল সহ ৮ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৪ জন কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
২৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় পৌরশহরের উত্তরবাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের সম্মুখে এই ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১১ জনকে আসামী করে থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বিয়ানীবাজার বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনার দিন বিয়ানীবাজার পৌরশহরে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উত্তরবাজারস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কপ্লেক্সের সম্মুখে এসে পথসভায় মিলিত হয়। এ সময় বিয়ানীবাজার থানার এসআই ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে মিছিল ও পথসভায় বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাদের বাকবিতন্ডা ঘটে। এক পর্যায় পুলিশ জোরপূর্বক তাদের ব্যানার ও হ্যান্ড মাইক কেড়ে নিতে গেলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ মিছিলকারী বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের লোকজন পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাঠকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায় ঘটনা স্থলের পাশে রক্ষিত পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ছুটে এসে বিএনপির লোকজনকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৪জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুল মতলিব, নজমুল ইসলাম পুতুল, ফখরুল ইসলাম ও সুয়েদ আহমদ। সংঘর্ষে ২ পুলিশ কনস্টেবল ও বিএনপির ৬জন সহ মোট ৮জন আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ কনস্টেবল (৫০৯) হায়দার আলী ও (২৯৮) রহিম আহমদ কে উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়েছে। বিএনপির আহতদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এই ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানার এসআই ফজলু মিয়া বাদী হয়ে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১১জনকে আসামী করে থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১৮, তারিখ ২৫/০১/২০২৪ ইংরেজি। মামলায় গ্রেফতারকৃত বিএএনপির ৪ নেতাকে আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলার আব্দুলাপুর গ্রামের তজমুল আলীর পুত্র আব্দুল মতলিব (৫০), মাথিউরা গ্রামের খলিল মিয়ার পুত্র নজমুল ইসলাম পুতুল (৪০), নালবহর গ্রামের সফিক উদ্দিন এর পুত্র ফখরুল ইসলাম (৪৭), নবাং গ্রামের আব্দুস শুকুর এর পুত্র সুয়েদ আহমদ (৩০), খশির গ্রামের রকমত আলীর পুত্র মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৩৬), কাকরদিয়া গ্রামের হাবীবুর রহমানের পুত্র নুর আহমেদ (৪০), ফতেহপুর বড়বাড়ির আজিজুর রহমানের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (২৮), সুপাতলা গ্রামের বাবুল আহমদ এর পুত্র নুরুল ইসলাম (২৫), কসবা গ্রামের আব্দুল মন্নানের পুত্র ফখরুল ইসলাম শিপু (২০), কাকরদিয়া গ্রামের ইমরান হোসেন ছফর এর পুত্র সজিবুর রহমান (২১) ও পুরুষপাল গ্রামের আব্দুর রব এর পুত্র সজল আহমদ (৩২)।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেব দুলাল ধর বলেন, বিএনপির লোকজন অনুমতি ছাড়া মিছিল-মিটিং করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় পুলিশ জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দিতে তাদেরকে বাধা দিলে তারা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের হামলায় থানার ২ পুলিশ আহত হয়েছে, পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার সাথে জড়িত ৪জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় থানায় পুলিশ এসল্ট মামলা হয়েছে। পুলিশ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে। অপরাধ করে আইনের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবে না।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302