• ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বড়লেখায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ: ৫ পুলিশসহ আহত ১০, গ্রেফতার ৫

admin
প্রকাশিত জুন ১৩, ২০২৪

বড়লেখা প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা পৌরশহরে পুলিশের সাথে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে ৫ পুলিশসহ উভয় পক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫জন কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১২ জুন রবিবার বেলা ১১টায় পৌরশহরের মধ্যবাজারে এই ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২২ জনকে আসামী করে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছে।

জানা যায়, বড়লেখা বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনার দিন ১২ জুন রবিবার সকাল ১১টার দিকে বড়লেখা পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা মিছিল নিয়ে শহরের মধ্যবাজার ইসলামীয়া বিল্ডিংয়ের সম্মুখে এসে প্রধান সড়ক অবরোধ করে। এসময় সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়লে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বড়লেখা থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলেই এসেই বেপরোয়া লাটিচার্জ শুরু করে অবরোধকারীদের উপর। এতে বিক্ষুব্ধ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়। শুরু হয় উভয় পক্ষে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে মুহুমুহ ইটপাঠকেল নিক্ষেপ করে। এসময় শহর জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রাবার বুলেট ছুড়ে বিএনপির লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশ ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৫জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলা বিএনপি নেতা কবির আহমদ, ফয়ছল আহমদ, সুমন আহমদ, সাইদুল ইবনে আলী ও রেদওয়ান আহমদ। সংঘর্ষে ৫ পুলিশ কনস্টেবল, ২ পথচারী ও বিএনপির ৩ জন সহ প্রায় ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত পুলিশ কনস্টেবল (২৯০) মজিদ উদ্দিনের মাথায় ইটের আঘাত ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের কোপে রক্তাক্ত জখম রয়েছে। এছাড়া কনস্টেবল ৫৯০ ময়না মিয়া, কনঃ ৭০৫ হায়দার আলী, কনঃ ১০৯০ রহিম আহমদ, কনঃ ১৪০৮ সাহেদ আহমদ রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ ও পথচারীদের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিএনপির আহতরা গ্রেফতার এড়াতে প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এই ঘটনায় বড়লেখা থানার এসআই আকবর হোসেন বাদী হয়ে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ২২জনকে আসামী করে থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ২০, তারিখ ১২/০৬/২০২২ইং। মামলায় বিএএনপির গ্রেফতারকৃত ৫জনকেও আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন, বড়লেখা উপজেলার গাজীটেকা গ্রামের মনজ্জির আলীর পুত্র কবির আহমদ (২৮), হাটবন্দ গ্রামের ইছমত আলীর পুত্র ফয়ছল আহমদ (২৬), কলাজুরা গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র সুমন আহমদ (৩০), বারইগ্রামের মুদরিছ আলীর পুত্র সাইদুল ইবনে আলী (২৫), বারইগ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র রেদওয়ান আহমদ (২০), পাখিয়ালা গ্রামের নুরুদ্দিন মিয়ার পুত্র জলিল হোসেন (৩২), জফরপুর গ্রামের মনোহর আলীর পুত্র জুবের আহমদ (৩০), গল্লাসঙ্গন গ্রামের ছমির উদ্দিনের পুত্র কামরুল হোসেন (২৩), কলাজুরা গ্রামের মুছব্বির আলীর পুত্র আবিদ আহমদ (১৮), মহুবন্দ গ্রামের মনোহর আলীর পুত্র আজিম উদ্দিন (২৮). এহুবন্দ গ্রামের আব্দুর রবের পুত্র সজল আহমদ (২৯), বারইগ্রামের আনছার আলীর পুত্র বিলাল আহমদ (৪৫), বর্ণি গ্রামের বশির উদ্দিনের পুত্র হেলাল আহমদ (৫৫), তারিমপুর গ্রামের বদরুল হকের পুত্র ফয়জুল হক (৫৭), হাটবন্দ গ্রামের মৃত মনজ্জির আলীর পুত্র ফয়ছল আহমদ (২০), গঙ্গারজল গ্রামের সাদাত আলীর পুত্র জাবের উদ্দিন (৫১), পাখিয়ালা গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র রনি আহমদ (১৮), হাটবন্দ গ্রামের সিদ্দিক আহমদের পুত্র পাভেল আহমদ (২৫), আইলাপুর গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র আব্দুল কুদ্দুস (২০), টেকাহালী গ্রামের আব্দুল জব্বারের পুত্র দেলোয়ার হোসাইন (৪৫), হাটবন্দ গ্রামের বলাই মিয়ার পুত্র জামাল উদ্দিন (২৮) ও পাখিয়ালা গ্রামের রফিকুল কবিরের পুত্র হুমায়ুন কবির (২৬)।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ আবু তাহের খান বলেন, বিএনপির লোকজন অনুমতি ছাড়া মিছিল করে অবরোধ করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ অবস্থায় পুলিশ জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দিতে তাদেরকে বাধা দিলে তারা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের হামলায় থানার ৫ পুলিশ আহত হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার সাথে জড়িত ৫জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় থানায় পুলিশ এসল্ট মামলা হয়েছে। পুলিশ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে। অপরাধ করে আইনের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবে না।