সিলেট সহ সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের জড়িতদের গ্রেফতার-বিচারের দাবিতে সিলেটের বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল সমূহের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (১৭ জুলাই) বিকাল সাড়ে তিনটায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে প্রবীণ রাজনীতিবিদ,বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য এর সভাপতিত্বে ও জেলা বাসদ আহ্বায়ক আবু জাফর এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, সিপিবি জেলা সভাপতি সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, সিপিবি সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, সিপিবি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান, সাম্যবাদী আন্দোলন এর এডভোকেট মহীতোষ দেব, বাসদ (মার্ক্সবাদী) জেলা সদস্য সঞ্জয় কান্ত দাশ, বাসদ সিলেট জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ হরিধন দাশ,বাসদ জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন,উদীচী জেলা সংসদের সহ-সভাপতি রতন দেব ও সাধারণ সম্পাদক মিন্টু যাদব,চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা, সাম্যবাদী আন্দোলনের এডভোকেট রণেন সরকার রণি, এডভোকেট উজ্জল রায়, মতিউর রফু, অজিত রায়,বিশ্বজিৎ শীল, মনীষা ওয়াহিদ, বুশরা সোহেল, আহমদ, রাজু আহমেদ, নাহিদ প্রান্তিক, প্রমূখ ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার রাগ ও জেদের বশবর্তি হয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে ফলে এর দায় এড়াতে পারে না। বরং সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সেতু, স্বরাষ্ট্র, তথ্য ইত্যাদি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা যেসকল মন্তব্য করেছে তা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিয়েছে। বিশেষত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের যেভাবে ছাত্রলীগকে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটানোর ক্লীনচিট দিয়েছে তা সারা দেশের মানুষকে হতবাক করেছে। ফলে ছাত্রলীগ আজ নব্য এনএসএফ এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে গোটা ছাত্র সমাজের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছে। আজকে দেশের আপামর ছাত্রসমাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সবগুলো ক্যাম্পাসকে রক্তাক্ত করছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দলদাস প্রশাসন শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকায়ই অবতীর্ণ হয় নাই সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে প্রশ্রয়-পৃষ্ঠপোষকতা করছে। অনেক স্থানে পুলিশ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন এই সরকার দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভোটারবিহীন সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশকে তা আরও সংঘাত ও সহিংসতার দিকে নিয়ে যাবে। জনগণ ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলা হয়, রাজপথে নেমে আসুন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করুন। শিক্ষাঙ্গনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করুন। নেতৃবৃন্দ একই সাথে সকল বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন হঠিয়ে জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানান।
বক্তারা, গত ১৬জুলাই কোর্ট পয়েন্টে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমাবেশে হামলায় নগর ছাত্র ফ্রন্টের সহ সভাপতি সুমিত কান্তি দাস পিনাক, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলর সাধারণ সম্পাদক তানজিনা বেগম, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মনীষা ওয়াহিদ ও সাধারণ সম্পাদক মাশরুক জলিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজু আহমদ সহ অসংখ্য শিক্ষার্থীদের আহত করার তীব্র নিন্দা এবং হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবি জানান ।