একুশে নিউজ ডেস্ক : দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের বাড়িঘর-মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হামলা, লুটপাটের প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ। দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার (১১ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকে সম্মীলিত সনাতনী ছাত্র সমাজের উদ্যোগে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে সারা দেশে দুই শতাধিক বাড়ি-ঘর, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। তার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে এই কর্মসূচি থেকে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কমিশন গঠনসহ আট দফা দাবি জানান তারা।
দাবিগুলো হলো-সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সকল প্রকার হামলা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রত্যর্পন আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্টানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপসালয় নির্মাণ করতে হবে। সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকয়ায়ন করতে হবে। শারদীয় দুর্গাপুজায় ৫ দিনের ছুটি দিতে হবে।
সমাবেশে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক শ মানুষ ‘তুমি কে তুমি কে, বাঙালি বাঙালি’, ‘আমার দেশ সবার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’, ‘আমার মাটি আমার মা, বাংলাদেশ ছাড়ব না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘সনাতনীর ওপর আক্রমণ, মানি না মানব না’, ‘আমার ঘরে হামলা কেন, জবাব চাই, জবাব দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। সেখানে নারীদেরও ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইসকন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও ইসকন সিলেটের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ বলেন, হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট চালানো হচ্ছে। আমরাতো এ দেশেই জন্মেছি, আমরা কোথায় যাবো। ক্ষমতায় যেই আসুক আমাদের নিরাপত্তা চাই। আমরা আমাদের বাসস্থান ও ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা চাই।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যেভাবে হিন্দুদের ওপর হামলা হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে, মন্দির ভাঙচুর করা হচ্ছে, তা দেখে তাঁরা স্তম্ভিত। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁদেরও নিরাপদে বাঁচার অধিকার আছে। তাঁরা অনেক পালিয়েছেন, ১৯৭১-এ পালিয়েছেন, বিভিন্ন সময় সরকারের ক্ষমতা পরিবর্তনে পালিয়েছেন, অস্থিতিশীল যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা পালাতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু এবার তাঁরা দুষ্কৃতকারীদের প্রতিরোধ করবেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, বৈষমীবিরোধী গনঅভ্যুত্থানে প্রধান লক্ষ্য ছিলো বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে যে সারাদেশে সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সমাবেশে সম্মিলিত সনাতনী সমাজের সদস্য গোপীনাথ দাস,রজত চক্রবর্তী, সোমা দাস,তুষার চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302