নিজস্ব প্রতিবেদক : লন্ডন প্রবাসী ছাত্রলীগের নেত্রী, পাপিয়া আক্তারের ফেঞ্চুগঞ্জের বাড়ীতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছ দুর্বৃত্তরা। এতে পাপিয়া আক্তারের বাব-মা মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক অনুসারে, পাপিয়া আক্তার, ফেঞ্চুগঞ্জ সদরের, ফরিদপুর গ্রামের মোঃ দুলাল মিয়া ও হাসনা হেনা বেগমের পঞ্চম সন্তান। পাপিয়া আক্তার বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ ছাত্র লীগের ফেঞ্চুগঞ্জ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং তিনি সক্রিয় নেত্রী ছিলেন। এছাড়া তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ কলেজে পড়া অবস্থায় কলেজ শাখার দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি দেশে থাকা অবস্থায় জামায়াত ও বিএনপি বিরোধী কার্যকলাপ ও বিএনপি সরকারের দূর্নীতি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে অনেক সোচ্চার থাকতেন এবং স্যোসাল মিডিয়ায় লেখা-লেখি করতেন।
স্থানীয় লোকেরা জানান যে, পাপিয়া আক্তার ছাত্রলীগ নেত্রী হওয়ার কারণে তার পরিবার স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতা ও কর্মীদের রোষানলে পড়েছেন। পাপিয়া আক্তার ও তার স্বামী গত জানুয়ারীতে দেশ ছেড়ে লন্ডনে চলে গেছেন এবং লন্ডনে স্বামীসহ বসবাস করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, গত ০৭ আগস্ট ২০২৪ তারিখে আনুমানিক রাত ৯টার সময় একদল দুর্বৃত্ত পাপিয়া আক্তারের বাড়িতে হামলা চালান এবং বাড়ির আসবাব পত্র ভাংচুর করে। হামলার সময় পাপিয়ার আক্তারের ভাই-বোন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তার বাবা মা দুর্বৃত্তদের হাতে মারাত্মক ভাবে লাঞ্ছিত হন এব আহত হন। দুর্বৃত্তরা পাপিয়া অক্তারের মা ও বোনের মূল্যবান গহনা সহ অনেক মূল্যবান জিনিস লুটকরে নিয়ে যায় এবং অবশেষে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। জানা গেছে পাপিয়া আক্তারের বাবা মাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তী করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বর, মোঃ লিয়াকত জানান পাপিয়া আক্তার ছাত্রলীগের সক্রীয় সদস্য ও নেত্রী ছিলেন এবং ফলে এলাকার বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা পাপিয়ার প্রতি চরম অসন্তোষ ছিল। ফলে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পরবর্তীতে অনেক আওয়ামীলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলার শিকার হন। এরই ধারাবাহিকতায় পাপিয়া আক্তারের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।
এলাকার মুদি দোকানদার করিম মিয়া জানান, পাপিয়া আক্তার লন্ডনে থেকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগ সম্পর্কে নানাবিদ স্টাটাস দিয়ে স্যোসাল মিডিয়াতে পোস্ট করে থাকেন। তিনি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কার্যকালাপের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখা লেখিকরেন।
গত কয়েকদিন আগে তার একটা ফেসবুক পোস্টে বর্তমান সরকার প্রধানের বিপক্ষে বিরুপ মন্তব্য করলে তার বিরুদ্ধে এলাকার ছাত্র জনতা ও বিএনপির নেতা কর্মীরা ফুঁসে ওঠে। তারই রেশ ধরেই এই হামলা, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে প্রায় রাত ১১ টার দিকে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসীবাহিনী পাপিয়ার আক্তারের বাড়িতে হানা দেয়। তখন বাড়িতে পাপিয়ারর বাবা, মা ও ভাই-বোন ঘুমিয়ে পড়ায় দুবৃত্তরা এই সুযোগটা নিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে দুর্বৃত্তরা তার বাবা-মাকে মারধর করে এবং লুটপাট চালায়। তারা প্রস্থান কালে ঘরের ভিতরে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং পাপিয়ার বাবাকে এই বলে হুমকি দিয়ে যায় যে পাপিয়া এই সরকার কিংবা বিএনপির বিরুদ্ধে লেখালেখি করলে তাকেও আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হবে।
এলাকার একজন জনপ্রতিনিধী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাপিয়া দেশে থাকা অবস্থায় আওয়ামীলীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের এক জন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি এখন আওয়ামীলীগের সরকার পক্ষে ও বিএনপি ও জামায়াতের বিরুধে লেখালিখি করেন।
স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেও আমাদের প্রতিনিধী যোগাযোগ করতে পারেনি। আমাদের প্রতিনিধি স্থানীয় ফেঞ্চুগঞ্জে থানায় যোগাযোগ করলে কর্তব্যরত পুলিশ পরিদর্শক এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান।