
নিজস্ব প্রতিনিধি: সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে শাহপরাণ (রহঃ) থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শাহপরাণ (রহঃ) থানার হাতিমবাগ, শিবগঞ্জ এলাকার সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টা ও বিষ্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত ৪ আগস্ট ২০২৪ইং তারিখ সিলেট শহরের বন্দর বাজারস্থ মধুবন মার্কেটের সামনে রাস্তায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে কর্মসূচীতে যোগ দিতে ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ছাত্র-জনতার সাথে মিলিত হয়ে শিবগঞ্জ সোনারপাড়া থেকে একটি মিছিল নিয়ে কোর্ট পয়েন্টের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। কোর্ট পয়েন্ট এলাকা পৌঁছানোর কিছু পূর্বে রায়নগরস্থ দাদাপীরের মাজার সংলগ্ন রাস্তায় পৌছামাত্র বর্ণিত আসামীগণ আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। আসামিগণের ছোড়া গুলি আমার শরীরের বিভিন্ন অংশ ও পিঠে লাগে। গুরুতর আহতাবস্থায় আমি রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। আমাকে মৃত ভেবে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরে ছাত্র-জনতার মিছিলে অংশ নেওয়া দুই জন ব্যক্তি আমাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আসামীগণ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হইয়া এলোপাতাড়ি গুলি করিয়া একটি ভীতিকর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। গুলি করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। দেশের সার্বিক আইন-শঙ্খলা পরিস্থিতি, চিকিৎসার কাজে ও আসামীগনের তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মামলায় তিনি সাবেক মেয়ের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক সংসদ সদস্য, সিলেট-৩, নাজমুল ইসলাম, সভাপতি সিলেট জেলা ছাত্রলীগ, রাহেল সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ, সুয়াইফুর রহমান মুয়াইমিন, লাইব্রেরী সম্পাদক, কুলাউড়া সরকারী কলেজ, মৌলভীবাজারসহ ৫৪জনের নাম উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করেছেন।
তবে এ মামলায় বিদেশে থাকা আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীদেরকে আসামী করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূক্তভোগীরা এ নিয়ে নানা সংশয় প্রকাশ করছেন। কুলাউড়া উপজেলার প্রতাবী গ্রামের বাসিন্দা মামলার ২১নং আসামী সুয়াইফুর রহমান মুয়াইমিনের পিতা জবেদ মিয়া অভিযোগ করেন, ‘তাহার পুত্র অনেক আগেই যুক্তরাজ্যে চলে যান। সে দেশে থাকতে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতো। সে কুলাউড়া সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের লাইব্রেরী সম্পাদক ছিল। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকার কারণে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাদের ইন্ধনে উক্ত মামলায় তাকে আসামী করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে পুলিশ বাড়িতে অভিযানের নামে হয়রানী করছে। এতে তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে এবং চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তার পরিবার।’
এ বিষয়ে শাহপরাণ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সাইফুল ইসলাম ৫৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত আছে।