★সম্প্রতি অসহায় এক পরিবারের দখলে থাকা ভূমি দখলের পায়তারার অভিযোগের ভিত্তিতে বেরিয়ে আসে এরকম চাঞ্চল্যকর তথ্য।
★তদন্তে প্রমাণিত হলে বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে বললেন ইউএনও
স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে খাস ভূমি নীতিমালা বর্হিভূত ভূয়া ভূমিহীন সেজে এক পরিবার দেড়শ শতক মূল্যবান ভূমি বন্দোবস্ত নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ওই পরিবারের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ থাকার পরও নিজের বসত বাড়ি ও বাড়ির পাশে দুই দাগে বড় আকারের ২টি প্লট বন্দোবস্ত নিয়েছেন। শুধু তাই নয় সম্প্রতি জোর করে প্রতিবেশীর বসত বাড়িটিও দখলের চেষ্টাসহ মিথ্যা মামলা ও নানা ভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই প্রভাবশালী ধনাঢ্য পরিবারের নামে।
রোববার সকালে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের কালীবাড়ি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো. মারুফ আহমেদ।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, উপজেলার কালীবাড়ি গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল করিম পৈতৃক সূত্রে একজন সম্পদশালী ব্যক্তি। তার পিতার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী সূত্রে তার পিতার নামে থাকা প্রায় সাত একর ভূমির মালিক হন আব্দুল করিম। এছাড়াও করিমের নিজ নামে উপজেলার বানিজ্যিক কেন্দ্র সাচনা বাজারে অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের একটি নিজস্ব দোকান ঘর, মশলা মিলসহ আরো বিভিন্ন জায়গা-জমি রয়েছে। পৈত্রিক সূত্রে ও নিজ নামে কেনা এত সম্পদ থাকার পরও সম্পদের হিসাব গোপন রেখে করিম নিজের নামে ও তার স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যের নামে ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে সাচনা বাজারের কালিবাড়ি গ্রামে দেড়শ শতক মূল্যবান জায়গা বন্দোবস্ত নিয়েছেন।
ভূমি অফিসের তথ্য থেকে জানাযায়, ২০১২ সালে সাচনা মৌজার ১নং সরকারি খতিয়ানভুক্ত কালিবাড়ি গ্রামে ৪২৯০ নং দাগে নিজেকে ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে নিজ নামে ৫০ শতক এবং একই সময়ে তার স্ত্রী মোছাঃ সিদ্দিকা আক্তারকেও ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে স্ত্রীর নামে ৪২৮৩ নং দাগে ৫০ শতক যার মোকদ্দমা নাম্বার ৪৪ (জাঃ) ২০১২ইং জেঃপ্রঃনং ১১৮/১১-১২ সালে বন্দোবস্ত নেন। এদিকে ঐ বছরই ১৪৮৮/২৯৯৮ দাগে করিমের বসত বাড়ির ৫০ শতক জায়গাও তার ভাইয়ের নামে বন্দোবস্ত নেন।
সম্প্রতি তার প্রতিবেশী মো. মারুফ তার দখলীয় জায়গায় পুরোনো ঘরের পাশে নতুন ঘর নির্মাণ করতে গেলে বাঁধা প্রদান করেন আব্দুল করিম। এ সময় করিম তার নামে এই জায়গা বন্দোবস্ত নেয়া আছে বলে কাজ না করার হুঁশিয়ারি দেন মারুফকে। পরে করিমের বিরুদ্ধে মারুফ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করলে গণমাধ্যম কর্মীদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তার নামে থাকা সরকারি মুল্যবান এত জায়গার চাঞ্চল্যকর তথ্য। বানিজ্যিক কেন্দ্রের সন্নিকটে আবাসিক এলাকার মধ্যে সরকারি এত দামি জায়গা এক পরিবারের দখলে বিষয়টি জানাজানি হলে ইতোমধ্যে এলাকায় আলোচনা- সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
এব্যাপারে অভিযোগকারী মারুফ বলেন, আমার দাদার আমল থেকেই এই বাড়িতে আমরা বসবাস করে আসছি। সম্প্রতি আমাদের নতুন আরেকটি ঘর নির্মাণের প্রয়োজন পড়লে ঘর তুলতে প্রয়োজনীয় মাটি ফেলে ঘরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করে করিম আমাকে আমার কাজে বাঁধা প্রদান করেন। এবং সাথে সাথেই করিম সুনামগঞ্জ জেলা বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্র্যাট আদালতের মাধ্যমে আমার কাজের বিরুদ্ধে কার্যবিধি ১৪৪ ধারা জারি করেন। বর্তমানে কাজ আমি বন্ধ রেখেছি।
অভিযুক্ত আব্দুল করিম বলেন, আমি এই জায়গা বন্দোবস্ত এনেছি। আমার বন্দোবস্তকৃত জায়গার মধ্যে মারুফ ঘর তোলার কারনে তাকে বাঁধা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর জানান-অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যদি করিম ভূমিহীন নীতিমালার আওতায় না আসে তাহলে তার বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে।