
স্টাফ রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা, মারপিট ও ককটেল বিস্ফোরণ এবং গুলি করার অপরাধে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা দিয়ে এসএমপি’র কোতোয়ালী থানায় ( মামলা নং-২৪ তাং-৭/১১/২৪ইং) দাখিল করা হয়েছে। সিলেট সদর উপজেলার ছালিয়া ভাবিরবাড়ির ময়না মিয়ার ছেলে কয়ছর আহমদ বাদী হয়ে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তিকে প্রধান আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিলেট মহানগর সেচ্ছা সেবকলীগের সহসভাপতি ও কোতোয়ালী থানার ভাঙ্গাটিকর নবীন-৩ নং বাসার বাসিন্দা ননি গোপাল দে এর ছেলে পীযুষ কান্তি দে, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার শাহ নেওয়াজের ছেলে রুহুল আমিন শিবলু আহমদ, সিলেট সিটি করপোরেশন ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম কর সম্রাট, সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান, এয়ারপোর্ট থানার বনকলা পাড়ার বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ ক্যাডার পাঙ্গাস, সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার জগদীশপুর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে ও কলকলিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি সুহেল তালুকদার, মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও শাহপরাণ ভাটপাড়ার বাসিন্দা ফিরোজ আলীর ছেলে রুহেল আহমদ, সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার সাদিপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ও কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফখরুল হোসেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানার পাড়ার গাওয়ের রলুম আলীর ছেলে হারুন মিয়া, জগদীশপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হান্নানের ছেলে ও কলকলিয়া ইউপি আওয়ামী লীগের সদস্য আজাদ মিয়া, সিলেট নগরীর এয়ারপোর্ট থানার খাসদবির এলাকার বন্ধন- ই/৩০ নং বাসার বাসিন্দা মোঃ আব্দুস শহীদ এর ছেলে ও ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেদওয়ানুর রহমান ইমন, কলকলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ ২নং ওয়ার্ডের সহসভাপতি ও শ্রীধরা গ্রামের মৃত ছেমেদ মিয়ার ছেলে খসরুল আবেদীন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ নেতা ও দরগা মহল্লা পায়রা ১১নং বাসার বাসিন্দা শফরুল ইসলাম এর ছেলে সাইফুল ইসলাম, নগরীর আম্বরখানা চৌকিদেখী এলাকার মৃত আব্দুর রূপ এর ছেলে রাজ্জাকুর রহমান, জগন্নাথপুর থানার কলকলিয় ইউপির ২নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সদস্য ও শ্রীধরা গ্রামের বাসিন্দা মৃত কদর মিয়ার ছেলে হাচ্ছানুর মিয়া, সিলেট নগরীর পশ্চিম পাঠানটুলার পল্লবী-ব্লক-এ-৪/২ এর বাসিন্দা আলীফ উদ্দিন কবির হোসেন, এয়ারপোর্ট থানার খাসদবির বন্ধন জি/৩০ এর বাসিন্দা ময়নুল ইসলামের ছেলে আব্দুল হক, জগন্নাথপুর থানার সৈয়দপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব তৈয়ব মিয়া কামালী, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম, গোলাপগঞ্জ থানার হেতিমগঞ্জ লক্ষীপাশা গ্রামের মৃত ইদ্রিছ আলীর ছেলে ও যুবলীগ নেতা লোকমান হোসেন, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক মির্জাপুর আসাদনগর গ্রামের শামসুল হকের ছেলে হুমায়ুন কবির। এছাড়াও ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে রাখা হয়েছে ৭০-৮০ জনকে।
কয়ছর আহমদ তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন বিগত ০৪/০৮/২০২৪ইং দুপুর অনুমান ২.০০ ঘটিকার সময় বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচী ফাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের দাবীতে অনুষ্টিত অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন নয়াসড়ক পয়েন্ট হইতে ঘটনাস্থলে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের ক্যাডাররা এলোপাতারি গুলি করে। তখন তিনি তার বুকের বামদিকে ও বামহাতে গুলিবিদ্ধ হন। তখন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ক্যাডাররা ওই এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পরলে উপস্থিত ছাত্র জনতা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম.এ. জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। চিকিৎসা শেষে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও আসামীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহে অভিযোগ দায়ের করেন।
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নুনু মিয়া জানান, গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ সমাবেশে হামলা, গুলি ও ককটেল মেরে আহত করার অভিযোগে কয়ছর আহমদ বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি মামলা হিসাবে গণ্য করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাছাড়া মামলার এজাহার নামীয় এবং ওই ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে ।