• ১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাজ্যে থেকেও সিলেটে দুই মামলার আসামী আব্দুর রাজ্জাক

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৫, ২০২৪
যুক্তরাজ্যে থেকেও সিলেটে দুই মামলার আসামী আব্দুর রাজ্জাক

তিনি প্রায় বছরখানেক আগ থেকে অবস্থান করছেন যুক্তরাজ্যে। কিন্তু তবু মামলাবাজদের খপ্পর থেক তার আর রেহাই মিলছেনা। ইতিপূর্বে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরও কয়েকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় দেশে অবস্থানরত আত্মীয়- স্বজন সবসময় আতঙ্কে আছেন। আর চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায় প্রবাসে অনিশ্চিত জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারীবাজার ইউনিয়নের বানিগাজী গ্রামের মরহুম কিয়াম উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বুধবারীবাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে যুক্তরাজ‍্য যুবলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস‍্যের দায়িত্ব পালন করছেন।

আব্দুর রাজ্জাক দেশে থাকতে রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর তিনি যুক্রাজ্য গমন করেন। এরপর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন।

এ অবস্থায় গত জুলাই- আগস্টে সারাদেশে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন যা পরবর্তীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পরিণত হয়।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত ৪ আগস্ট পুলিশ- বিজিবির গুলিতে গোলাপগঞ্জে ৭জন নিহত হন। এছাড়াও গুলিতে আহত হন শতাধিক মানুষ।

পরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এসব নিহত ও আহতের ঘটনায় একের পর এক মামলা দায়ের হতে থাকে।

তারই ধারাবাহিকতায় আহত এক শিক্ষার্থী মিনহাজ আহমদের (১৮) পক্ষে তার ভাই গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিন ইউনিয়নের রায়গড় গ্রামের মৃত শাহাব উদ্দিন আহমদের ছেলে তানভির আহমদ (৩২) বাদি হয়ে গত ৩০ অক্টোবর সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এ একটি মামলা ( নং গোলাপগঞ্জ সি আর ৪২১/২৪) দায়ের করেন।

যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও এ মামলার অন্যতম আসামী করা হয় আব্দুর রাজ্জাক কে (৭১ নং)।

এদিকে একই দিন (৪ আগস্ট) দুপুর ২টায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে সংগঠিত সংঘর্ষের ঘটনায় গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিন ইউনিয়নের পশ্চিম রায়গড় গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে আজমল হোসেন (২৬) গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গোলাপগঞ্জ থানায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করা হয় (নং ১৭/১৯/০৯/২৪)। মামলার বাদি আহত আজমলের চাচা ও একই গ্রামের তরমিছ আলীর ছেলে তাজুল ইসলাম। এ মামলারও অন্যতম প্রধান (৪০ নং) আাসমি যুক্তরাজ্য প্রবাসি আব্দুর রাজ্জাক।

আদালতে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদি তানভির আহমদের আইনজীবী এম ইসরাফিল আলী অ্যাডভোকেট। আর তাজুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার তৎকালীন ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মীর মো. আব্দুন নাসের।

এদিকে আব্দুর রাজ্জাকের গ্রামবাসিদের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, বিএনপি- জামায়াত উভয়দলের হাইকমান্ড মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের না করতে বারবার নির্দেশ দিলেও গোলাপগঞ্জের একটি মামলাবাজ চক্র এসব নির্দেশনাকে কোনো পাত্তাই দিচ্ছেনা। তাই তারা যুকরাজ্যে থাকা আব্দুর রাজ্জাক কে নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থে একের পর এক মামলার আসামি করছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, আরও অনেক মামলায় তাকে ফাঁসানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমন হুমকিতে তার পরিবারের সদস্যরা আতংকিত। তারা এসব ব্যাপারে কোনো আইনী পদক্ষেপও নিতে পারছেন না মামলাবাজ চক্রের ভয়ে। যদি তাদের বিরুদ্ধেও এমন আজগুবি মামলা দায়ের করা হয়, তাহলে তার কোথায় যাবেন, কার কাছে যাবেন।

তারা অবিলম্বে আব্দুর রাজ্জাকের নাম আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়ার আহ্বান জানান।

সার্বিক বিষয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত আব্দুর রাজ্জাক হোয়াটসঅ্যাপে কল ও ভয়েস ম্যাসেজ দিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে আমি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছি। অথচ ৪ আগস্টের ঘটনায় আমাকে দুটি মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলাগুলোর কোনো বাদির সঙ্গে শত্রুতা দূরে থাক, চেনা পরিচয়ও নেই! তাছাড়া আরও অনেক মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। এসব ব্যাপারে আসলে কিছু বলার ভাষা আমার নেই। বিএনপি- জামায়াতের এই মামলাবাজ চক্রটির কাছে আমিসহ আরও অনেক নির্দোষ নিরিহ মানুষ ও তাদের স্বজনরা অসহায়। তিনি বলেন, তাদের কারণে আমাদের আইন ও বিচার ব্যবস্থাও আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি এমন মিথ্যা বানোয়াট কাল্পনিক বা ভৌতিক মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।