জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সহস্রাধিক তাজা প্রাণের বিনিময়ে ছাত্র জনতার বিপ্লবে ফ্যাসিষ্ট সরকার পালিয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৬বছরে ফ্যাসিষ্ট স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ভোটাধিকার বিচার ব্যবস্থা অর্থনীতিকে ধ্বংস করে রাষ্ট্রটাকে পোকলা করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রেখেছিল। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ১৮কোটি মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে জুলাইয়ে রাস্তায় নেমেছিল। তাদের সামনে ছিল ফ্যাসিষ্ট স্বৈরাচারি খুনি হাসিনাকে বিতাড়িত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন, আর পিছনে ছিল মৃত্যু। বিকল্প আর কিছুই ছিল না। এই গনঅভ্যুত্থান সফল করতে প্রায় দুই সহস্রাধিক আন্দোলনকারী রাজপথে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। ত্রিশ হাজারের অধিক মানুষ আন্দোলনে অঙ্গ হারিয়েছে।
সমগ্র দেশবাসী দেশগড়ার চেতনায় মৃত্যুর ভয়কে জয় করেছে। ৫ই আগস্ট বিশ্ববাসী নতুন এক বাংলাদেশ দেখেছে। সেনাবাহিনী সেনাপ্রধান রাষ্ট্রপতি ছাত্র জনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতি সমর্থন সংহতি জানিয়েছেন এটা কি ছিল তাদের দেশপ্রেম? না কি দেশবাসীর আন্দোলনের মুখে তাদের অসহায় আত্মসমর্থন নয়তো দূর্বীসন্ধি। সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান ১০ই আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন ৫ই আগস্ট ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার কুলাঙ্গার দোসর দূর্নীতিবাজ ৬২৬জন এমপি, মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা, প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন সেনা ক্যাম্পে নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নিয়েছিল। আমরা পরবর্তীতে ১০/১২জনকে গ্রেফতার হতে দেখেছি, বাকী অপরাধীগুলো কেমন করে দেশ থেকে পালিয়ে গেল? নিশ্চয়ই অন্তবর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এমনকি সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জান, পুলিশের আইজিপি সরাসরি জড়িত। তা না হলে এই দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক অপরাধীরা দেশের সম্পদ লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুট করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হত না? আজকে দেশের মানুষ বুঝতে অন্তবর্তী সরকারের কেয়কজন বিতর্কিত উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনীর অসৎ কর্মকর্তা পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ কর্তা ব্যক্তিরা অবৈধ ভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ভোটাধিকার বিচার ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিকে ধ্বংসকারীদের তারা নির্বিগ্নে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। অন্তবর্তী কয়েকজন উপদেষ্টা এবং ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের রাজনৈতিক অবিলাসী অসৎ উদ্দেশ্য দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিগ্রেডিয়ার অবঃ সাখাওয়াত হোসেন, শেখ বশির উদ্দিন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর বিরুদ্ধে দেশবাসী বিশাল বিক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের পদত্যাগ দাবী করছেন। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে উপদেষ্টাদের কয়েকজন এবং ছাত্র সমন্বয়কারী সার্জিল আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজেদেরকে দেশের মালিক দাবী করছেন। নিঃসন্দেহে অন্তবর্তী সরকারের প্রায় পাঁচ মাসে তারা রীতিমতো ব্যর্থ। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, শেয়ারবাজার কারসাজিদের কাছে দেশবাসী জিম্মি। আমি রাজনীতি করি জনপ্রতিনিধি ছিলাম অন্যায় অসঙ্গতি দেখলে প্রতিবাদ করি, কথা বলি লেখালেখি করি। আমার মতো অতি ক্ষুদ্র মানুষের ঘটন মুলুক সমালোচনাও তারা সহ্য করতে পারছে না। পুলিশ দিয়ে প্রায়শই আমার পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল করে চলেছে। খুনি স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট হাসিনার সরকার আর অন্তবর্তী সরকারের মধ্যে দেশের মানুষ কোন তফাৎ খুঁজে পায় না। দেশের মানুষ কি সত্যিকার ভাবে স্বাধীন হতে পেরেছে?
বিগ্রেডিয়ার অবঃ সাখাওয়াত হোসেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, শেখ বশির উদ্দিনের উপদেষ্টা পরিষদে অন্তভূক্তি জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্খা বিরোধী, এরা ফ্যাসিবাদের ঘৃন্য দোসর এদের অপসারণ করতেই হবে। চিহ্নিত করতে হবে দেশের ধর্মীয় সামাজিক সম্প্রীতি কারা বিনষ্ট করছে, সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকারুজ্জান, রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু রাষ্ট্রের অপূরনীয় ক্ষতির দায় এরা এড়াতে পারেন না। ফ্যাসীবাদ এবং ভারত বিরোধী শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য গড়ে উটেছে এই ঐক্যকে সুসংহত করতে পারলে আগামী প্রজন্ম নতুন একটা বাংলাদেশ উপহার পেতে পারে। জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল না হলে দেশের অপূরনীয় ক্ষতি হবে, বিপন্ন হবে দেশের সার্বভৌমত্ব।
লেখকঃ মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ ছাতক।
সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302