সিলেট প্রতিনিধি: সিলেট জেলার দক্ষিন সুরমা থানাধীন নুরপুর, ফরিদপুর গ্রামের জহুর আলীর ছেলে জালাল আহমদ হত্যা মামলার রায় দীর্ঘ দিন পর ঘোষনা হয়েছে। বিগত ০১/১০/২০১৮ইং তারিখে অপহরন করে জালাল আহমদকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় জালাল আহমদকে হত্যা করার দায়ে ছালেক আহমদ ও তারেক আহমদ উভয় পিতা-আপ্তাব আলী এবং মোঃ লিটন আহমদ ও লিমন আহমদ, উভয় পিতা-আজম আলীদেরকে জাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং লাশ গুম করার সহায়তা করার দায়ে কার ড্রাইভার সবুজকে সাত বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়াছেন আদালত। বুধবার (২১ মে ২০২৫ইং) সিলেট মহানগর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজের বিচারক আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষনা করেন। এছাড়া দন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামীকে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়াছেন আদালত। এ ছাড়া সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানীত না হওয়ায় আসামী ইছবর আলী ও আজম আলীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের ০১ অক্টোবর দক্ষিন সুরমা থানার ফরিদপুর গ্রামের জহুর আলীর ছেলে জালাল আহমদ মায়ের জন্য মেডিসিন ও প্রতিদিনের বাজার আনার জন্য স্থানীয় নাজির বাজারে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার পর ডিজিজ জালাল আহমদের পিতা-মাতা,ভাই-বোন খোঁজাখোজির একপর্যায়ে বিগত ০৩/১০/২০১৮ইং তারিখে স্থানীয় একটি পত্রিকায় দেখেন দক্ষিন সুরমার চন্ডিপুল নামক স্থানে একটি লাশ পাওয়া গিয়াছে এবং ওসমানী মেডিকেলে লাশ রয়েছে। খবর দেখার সাথে সাথে জালাল আহমদের ভাই মোহাম্মদ লোকমান আহমদ ওসমানী মেডিকেলে মর্গে লাশ দেখে সনাক্ত করেন এবং আইনগত সব কার্যক্রম গ্রহনের পর বাড়ীতে এনে লাশ দাপন কাপন সম্পন্ন করেন। পরের দিন অর্থাৎ বিগত ০৪/১০/২০১৮ইং তারিখে মোহাম্মদ লোকমান আহমদ বাদী হয়ে ০৬ জনকে আসামী করে দক্ষিন সুরমা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাদীর বয়োঃবৃদ্ধ পিতা জহুর আলী বলেন-আমার ছেলের হত্যা মামলা দায়ের করার পর আসামীরা আমার অপর ছেলে মোহাম্মদ লোকমান আহমদকে প্রানে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে মর্মে প্রকাশ্যে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। একপর্য়ায়ে আসামীদের হুমকিতে বিচলিত হয়ে আমার ছেলে মোহাম্মদ লোকমান আহমদ ভারত হয়ে বিভিন্ন দেশ ঘুরিয়ে প্রানে বাচাঁর জন্য ফ্রান্সে চলে যায়। আসামীদের প্রতিনিয়ত হুমকিতে আমার স্ত্রী হার্ট এট্যাক করে মারা যান। আমার সন্তান ও স্ত্রীকে হারিয়ে আমি খুব ভয়াবহ অবস্থায় দিনযাপন করিতেছি। আমার ছেলে মোহাম্মদ লোকমান আহমদ তাহার ভাই হত্যার বিচার চাহিয়া আদালতে স্বাক্ষী দেওয়ার পর আসামীগন আরো হিংস্র হয়ে উঠে। আদালত মারফতে জানা যায়, ২০১৯ সালে এজাহারনামীয় ০৬ জন ও তদন্তে প্রাপ্ত আসামী কার ড্রাইভার সবুজ আহমদকে সম্পৃক্ত করে মোট ০৭ জনের বিরুদ্ধে অত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অত্র মামলার বাদীসহ মোট ১১ জন স্বাক্ষী মাননীয় আদালতে স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলার রায় প্রকাশের পর অত্র মামলার বাদীর বাড়ীতে তাহার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য গেলে, বাদীর পিতা বলেন, আসামীদের ভয়ে আমার ছেলে প্রানে বাচাঁর জন্য ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ফ্রান্সে চলে যায়, মামলার রায় শুনে খুশি হয়েছি কিন্তু আসামী ছালেক ও লিমন দুপুর অনুমান ০৩ ঘটিকায় ১০/১২ জন সন্ত্রাসী লোক নিয়া আমার বাড়িতে আসিয়া আমার ঘরের জিনিষপত্র ভাংচুর করিয়া হুমকি দিয়া বলে গেছে আমার ছেলে মোহাম্মদ লোকমান আহমদকে তাহারা হন্যে হয়ে খুজিঁতেছে। যেখানে পাইবে তাহাকে খুন করিয়া লাশ সুরমা নদীতে ফেলে দিয়ে মামলা করিয়া সাজা করানোর স্বাদ মিটাইয়া দিবে। আমি ভয়ে আমার একমাত্র মেয়েকে ফোন করিয়া আনিয়াছি। সেও ভয়ে আমার সাথে থাকতে চাচ্ছেনা। আমি কি করবো ভেবে পাচিছনা। পুলিশ কে জানাইলেও আসেনা। আমার জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই, বড় অসহায় অবস্থায় দিন কাঠছে। আমার ভয় হইতেছে আসামীরা আমার ছেলে মোহাম্মদ লোকমান আহমদকেও সুখে শান্তিতে থাকতে দিবেনা। তাহাকেও মারার জন্য হন্যে হয়ে খুজঁতেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলাকারীদের হাতে ধারালো দেশীয় অস্ত্র ছিলো। এসময় তারা চিৎকার দিয়ে বলে মোহাম্মদ লোকমান আহমদকে খুঁজে পেলে তারা প্রাণে মেরে ফেলবে। বর্তমানে তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে জীবন যাপন করিতেছেন।
ঘটনার বিষয়ে দক্ষিন সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Editor: Shahin Ahmed & Sadrul Islam Lukman
Office: Hoque Super Market, 3rd Floor, Zindabazar, sylhet.
Email: ekusheynet.syl@gmail.com
Contact: 01739447302