• ২৬শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ৩রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ সরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির স্মারকলিপি প্রদান

admin
প্রকাশিত আগস্ট ২৫, ২০২৫
৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ সরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির স্মারকলিপি প্রদান

স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠাসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ সরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সিলেটের নেতৃবৃন্দ। সোমবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত জনতার সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শিক্ষা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার করা সরকারের অন্যতম কাজ বলে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন। এতে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত শিক্ষার মেরুদন্ড মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-কর্মকর্তাগণ আশান্বিত। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষকের প্রতিনিধিত্বকারী একটি রেজিস্টার্ড পেশাজীবি সংগঠন। সরকারি মাধ্যমিকে পদোন্নতিযোগ্য পদ মাত্র ৪%। যৌক্তিক কোনো পদসোপান না থাকায় দীর্ঘ ৩২/৩৩ বছর চাকুরী করেও অধিকাংশ শিক্ষককে পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যেতে হয়। পদোন্নতি অনিয়মিত বিধায় বেশকিছু পদ খালি পড়ে থাকে। যা পদোন্নতি বঞ্চিতদের হতাশ করার পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। সরকারি মাধ্যমিকে শিক্ষক-কর্মকর্তাগণ প্রাপ্য বকেয়া টাইমস্কেল, পদমর্যাদা, পদোন্নতি, পদায়ন সহ চাকুরির বিভিন্নক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে সরকারি মাধ্যমিকে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসন জরুরী। মেধা ও মননে আধুনিক এবং চিন্তা-চেতনায় প্রাগ্রসর একটি সুশিক্ষিত জাতিই একটি দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবলের কোনো বিকল্প নেই। দক্ষ জনবল সৃষ্টির অন্যতম প্রধান বাহন হলো শিক্ষা। আগামী প্রজন্মকে শিক্ষা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ, নৈতিক মূল্যবোধ, জাতীয় ঐতিহ্য ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা তথা উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে সময়ে সময়ে শিক্ষানীতিতে পরিবর্তন আনা হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষণা করা হয়। উক্ত শিক্ষানীতিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের বিষয়ে যেসব কথা বলা হয়েছে তার কোনোটাই বাস্তবায়ন হয়নি।

মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ৫ দফা দাবীগুলো হচ্ছে
১. স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা
২. সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেডে উন্নীত করে ৪ জরীয় পদসোপান
৩. অনতিবিলম্বে আঞ্চলিক উপপরিচালকের প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণসহ মাধ্যমিকের সকল কার্যালয়ের স্বাতন্ত্র্য ও মর্যাদা রক্ষা
৪. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সকল শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন
৫. বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল এর মঞ্জুরী আদেশ প্রদান

স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা:
শিক্ষাক্ষেত্রে মাধ্যমিক স্তর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ৯টি বিভাগীয় কার্যালয়, ৬৪টি জেলা শিক্ষা অফিস, ৫১৬টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, ৬৮৬টি সরকারি কলেজ, ৭০৬টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০৪টি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ৫টি উচ্চ মাধ্যমিক টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক হেপী বেগম, সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক নূরজাহান খানম চৌধুরী, দক্ষিণ সুরমা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক সূচরিতা দাস, সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক নুরুল ইসলাম, সিলেট সরকারি অগ্রগামি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সিনিয়র শিক্ষক তাজুল ইসলাম, সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ, সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আবুল খায়ের, সিনিয়র শিক্ষক শওকত হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক আবু নছর মোহাম্মদ সুফিয়ান, সিনিয়র শিক্ষক জয়নাল আবেদীন খান, সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. শহীদুল আলম প্রমুখ।