কটিয়াদী প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা এলাকায় আচমিতা জর্জ ইনস্টিটিউশন উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোঃ জামাল (২৬) নামক এক আওয়ামী লীগ কর্মী ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং উভয় পক্ষে ৯ জন আহত হয়েছেন। নিহত মোঃ জামাল স্থানীয় আচমিতা গ্রামের মতিউর রহমানের পুত্র। মতিউর রহমান ৬নং আচমিতা ইউপির চেয়ারম্যান ও কটিয়াদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের দিন সকাল ০৯.৩০ ঘটিকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে ঐদিন বিকালে কটিয়াদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল কাহার আকন্দ ও সাবেক বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আখতারুজ্জামান এর মধ্যে মূলত ভোটের লড়াই চলছিল। নির্বাচনের দিন সকাল ০৯.৩০ ঘটিকার সময় স্থানীয় আচমিতা জর্জ ইনস্টিটিউশন উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে কেন্দ্র দখল ও জালভোট দেয়া কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র দা, লাঠি ও লোহাররড দিয়ে উভয় পক্ষে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় ভোটকেন্দ্র রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ভোটাররা দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়, বন্ধ হয়ে পড়ে ভোটগ্রহণ। খবর পেয়ে থানা থেকে রিজাভ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়নন্ত্রণ করে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে প্রায় ১০জন আহত হন। তন্মধ্যে আওয়ামী লীগ কর্মী মোঃ জামাল ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করে। তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের কুপে রক্তাক্ত জখম হয়, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে পুলিশ জানিয়েছে। এসময় স্থানীয় লোকজন পুলিশের সহায়তা অন্যান্য আহতদের উদ্ধার করে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরন করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ময়না তদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। এদিকে প্রায় ৩ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর ঐ ভোটকেন্দ্রে ফের ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
এই ঘটনায় নিহত মোঃ জামাল এর পিতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বাদী হয়ে ১৫জনকে আসামী করে ঐদিন বিকালে কটিয়াদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৬, তারিখ- ০৭/০১/২০২৪ইং। মামলার আসামীরা হলেন, কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা গ্রামের আব্দুল হান্নানের পুত্র এতোয়ার হোসেন (৪০), আচমিতা গ্রামের মোঃ ইসমাইলের পুত্র সিদ্দিকুর রহমান (২৮), চারিপাড়া গ্রামের আছব্বির আলীর পুত্র ইসলাম উদ্দিন (৩১), পূর্ব চারিপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র মস্তুফা উদ্দিন (২৫), অগ্রেকোনা গ্রামের আনোয়ার আলীর পুত্র বাবুল আহমদ (৩৫), গাংকুল পাড়া গ্রামের আনোয়ার আলীর পুত্র মাসুক উদ্দিন (৪০), মধ্য পাড়া গ্রামের নুনই মিয়ার পুত্র ফরহাদ হোসেন (৫০), গনেরগাঁও গ্রামের তবারক আলীর পুত্র ইকবাল হোসেন (৩৫), অষ্টঘড়িয়া গ্রামের ময়না মিয়ার পুত্র তাজ উদ্দিন (২৯), আচমিতা গ্রামের আব্দুল মালিকের পুত্র মুরশেদ আহমদ (৩৫), চারিপাড়া গ্রামের শামসুল হকের পুত্র রজাক মিয়া (৪৮), পূর্ব চারিপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র রিয়াজ আহমদ (৩২), অগ্রেকোনা গ্রামের ইনছাই আলীর পুত্র সাইদুল (২৭), পং মসুয়া গ্রামের ইনছান আলীর পুত্র আবু তাহের (৫৫) ও আচমিতা গ্রামের পাকি মিয়ার পুত্র হেলাল উদ্দিন (৫২)।
এ বিষয়ে কটিয়াদী থানার অফিসার ইনচার্জ অবনী শংকর কর বলেন, সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দয়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশী অভিযান চলছে। আইনের হাত থেকে কোন অপরাধী রেহাই পাবে না।