মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান: ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিষ্ট খুনি হাসিনার পতন হলেও স্ব-গৌরবে তার দোসররা এখনও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) সাখাওয়াত হোসেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, শেখ বশির উদ্দিন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান তাদের কোন ভুমিকা ছিল না! অগণিত মানুষের প্রশ্ন তারা কিভাবে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পায়?
স্বৈরাচারী মাফিয়া অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দূর্নীতির যে বিষ বৃক্ষ রোপণ হয়েছিল তা আজ-ও বহমান। দূর্নীতিতে পুরো পুলিশ বিভাগ কলঙ্কিত। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যখন যে দল থাকে তাদের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিনত হয় পুলিশ, যে কারণে তারা অঘোষিত দূর্নীতির সুযোগ পেয়ে যায়। সাবেক পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ হাজার হাজার কোটি টাকা দূর্নীতি করে কিভাবে দেশের বাহিরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়?
পুলিশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা মামলা বানিজ্যে জড়িত। মিথ্যা সাজানো মামলায় যে কাউকে গ্রেফতার করা ভয়ভীতি হুমকি প্রদর্শন করে ঘুষ দূর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়া এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। যে কারণে পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি খুবই কলঙ্কময়। কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তার নির্লজ্জ ঘুষ এবং চাঁদ আদায়ের আলোচনা আজ অপেন বিষয়। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে হয় ক্রসফায়ারে নিয়ে যাবে নয়তো গুম করে ফেলবে, না হয় মিথ্যা সাজানো মামলায় জেলে আটকে রাখবে। রাষ্ট্রের ক্ষতি করে কতিপয় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সাথে আঁতাত করে সুনামগঞ্জ জেলার পুলিশের এসপি আহম আনোয়ার হোসেন এবং সার্কেল এসপি নাসিম আহমেদ তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাঁটা নদী থেকে এবং সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ধুপাজান নদী থেকে প্রতিদিন অবৈধ পন্থায় বালু হরিলুটের সুযোগ করে দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। লোকমুখে প্রকাশ প্রভাবশালী নেতাদের দিয়ে চাঁদা আদায় করে সুনামগঞ্জের এসপি জনাব আহম আনোয়ার হোসেন এবং সার্কেল এসপি জনাব নাসিম আহমেদ প্রতিদিন তিনি ৬লক্ষ টাকা তারা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অন্য দিকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে স্থানীয় অনেক নেতা এবং ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ তাদের উপর আছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুনামগঞ্জের দুইজন ব্যবসায়ী বলেছেন হত্যা মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ৭০লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন এই দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা। ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও পুলিশের অসাধু ঘৃণ্য চরিত্রের কর্মকর্তাদের আচরণের কোন পরিবর্তন হয়নি। কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তা লাগামহীন দূর্নীতি এবং থানা হাজতে অনেক নারীকে ধর্ষণ করার নজিরও আছে। যে কারণে পুলিশকে মানুষ ভাবা যায় না। ভাবতে খুব কষ্ট হয় এতো ঘৃন্য নিচু চরিত্রের মানুষগুলো (পুলিশ) কিভাবে রাষ্ট্রের সেবক হয়? ক্ষমতার অপব্যবহার আর দূর্নীতির করালগ্রাসে দিশেহারা পুরো জাতি। পুলিশ জনগণের সেবক না হয়ে জনগণের উপর জুলুম করাই যেন তাদের ধর্ম। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, ৯ই আগস্ট ২০২৪ইংরেজী থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইংরেজী পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে বাংলাদেশে ৫২জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে ২১জন, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে ৩১জন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যহীন দূর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের যে আকাঙ্খা ছিল তা ব্যর্থ হতে চলছে। সুনামগঞ্জে দূর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের তদন্ত পূর্বক বরখাস্ত করে তাদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবী জানাচ্ছি।