
একুশে নিউজ ডেস্ক : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের পাড়ুয়া গ্রামের একই গোষ্টির কয়েকটি পরিবারের সদস্যদের চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির কারণে অতিষ্ট একই এলাকার ৫টি মহল্লার বাসিন্দা। একের পর এক অভিযোগ ও মামলা করেও তাদের রুখা যাচ্ছেনা। এলাকার লোকদের শন্তিপূর্ণ বসবাস করতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে পাড়–য়া এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পাড়ুয়া গ্রামের আফজাল হোসেন।
বক্তব্যে বলা হয়- গত রোববার পাড়ুয়া লামাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কাজল মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী রোকসান মিয়া সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শওকত আলী বাবুলসহ এলাকার বিভিন্ন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন। যা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার সামিল। বাবুল একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক। তার পিতা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও দাদা পাকিস্তান আমলে ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। রোকসান দাবি করেন ২৫ জুন রাতে ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি হারুন মিয়া ও তার ছেলে রুহল মিয়া হামলার শিকার হয়েছে। বাস্তবে হারুন কোনো বিএনপি নেতা নয় এবং কারা হামলা করেছে তার সাথে এলাকাবাসীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে রোকসানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান পাড়ুয়াবাসী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে পাড়–য়া গ্রামের বাসিন্দা সামসু মিয়া ওরফে জল্লাদ ও তার ভাই হারুন মিয়ার পরিবারের সদস্যদের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ। হারুন মিয়ার ছেলে আকাশ, রুবেল, মুন্না, মারুফ, জল্লাদের ছেলে আইয়ুব মিয়া, কাজল মিয়ার ছলে রোকসান মিয়া, লালু মিয়া ও সোনাই মিয়াসহ কয়েকটি পরিবার নানা অপরাধে জড়িত। জল্লাদ মিয়া এক সময়ে কুখ্যাত ডাকাত ছিলেন। তার ভাই হারুন মিয়ার নেতৃত্বে একের পর এক বাড়িতে চুুরি, মোটরসাইকেল, পানির পাম্প, লোহা চুরি, ক্রাশার মিল, স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি-ডাকাতি, রাস্তায় ছিনতাই চলছে। এলাকার লোকজন তাদের বিরুদ্ধে অতিষ্ট হয়ে ২০২১ সাল থেকে রুখে দাড়ায়। গত কয়েক মাসে একাধিক ঘটনার জন্ম দেয় তারা। এর মধ্যে গ্রামের আল আমিনের মোটরসাইকেল রাস্তায় চাকু ধরে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। দোকান চুরিতে বাধা দেওয়ায় গত ১৮ জুন পাড়ুয়া বাজারের ব্যবসায়ী বদিকোনা গ্রামের হারুন মিয়াকে মারধর করে ওই চক্র। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীনন। ৫ আগস্টের পর স্থলবন্দরের মালামাল লুটেও এ চক্র জড়িত ছিল। তাদের চুরি, ডাকাতিসহ নানা অপরাধের অভিযোগ তুলে সর্বশেষ গত ২৩ জুন গণস্বাক্ষরে স্থানীয় প্রশাসনে অভিযোগ দাখিল করা হয়। এর আগে ২০২৩ সালে এলাকার ১৯৭ জন ব্যাক্তি স্বাক্ষরিত অভিযোগসহ বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের অভিযোগ দাখিল করা হয়। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা। এখন এলাকার লোকজন যখন সোচ্ছার তখন অপরাধীরা মিথ্যাচার শুরু করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকার শান্তিপূর্ণ বসবাসে অপরাধীদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন পাড়ুয়াবাসী। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনু মিয়া, ইলিয়াস আলী, সিরাজুল ইসলাম, মানিক মিয়া, সামছু মিয়া, আল আমিন, মিজানুর রহমান, মো. জিলানী, মো. সুফি, নাজমুল হোসেন শাওন প্রমুখ।