
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ আজ আর কেবল তাত্ত্বিক আলোচনা নয়, বরং বাস্তবিক অর্থে তরুণরা নেতৃত্বে । সেই তরুণদের মধ্যে একজন মো. আমিনুল ইসলাম—যিনি একই সঙ্গে রাজনীতিক, সমাজকর্মী, উদ্যোক্তা ও আইন পরামর্শক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। মাত্র ২৭ বছর বয়সেই তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের প্রবাসী কমিউনিটিতে ন্যায়, গণতন্ত্র ও পরিবর্তনের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন। তাঁর নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্মের আশা–আকাঙ্ক্ষা নতুন মাত্রা পাচ্ছে। তিনি বিশ্বাস করেন, ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতি ও তরুণ সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে গড়ে তুলবে।
ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনীতির ময়দানে:
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন আমিনুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সেই সময় ছাত্রসমাজ সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থায় ন্যায় ও সমতার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল। আমিনুলও সেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদে সক্রিয় হন, যা পরে গণঅধিকার পরিষদে রূপ নেয়। ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্ব তাকে অনুপ্রাণিত করে। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলে সংগঠন গড়ে তোলায় তিনি সংগঠক হিসেবে ভূমিকা রাখেন।পাশাপাশি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও জবাবদিহিমূলক গণতন্ত্রের ধারণাকে তিনি সবসময় গুরুত্ব দিয়েছেন। রাজনীতি শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ থাকেনি আমিনুল ইসলামের জন্য। যুক্তরাজ্যে প্রবাসীদের ভোটাধিকারের অধিকারের আন্দোলনে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ, যুক্তরাজ্যের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তিনি প্রবাসীদের ভোটাধিকার, নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ এবং তাদের অবদানের স্বীকৃতির জন্য লড়াই করছেন।
২০২৫ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থন সর্বপ্রথম সংহতির ডাক দিয়ে দেশের বাহিরে আন্দোলন বেগমান করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। সেই আন্দোলন শুধু প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করেনি বরং শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে সারা পৃথিবীর প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐক্যবদ্ধ করেছে।
শিক্ষা ও পেশাগত পরিচিতি
মো: আমিনুল ইসলাম যুক্তরাজ্যের কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স ও গ্রিনউইচ ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। রাজনীতি ও লেখাপড়ার বাইরে পেশাগত জীবনেও তিনি সমানভাবে সক্রিয়। লাইট গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তিনি শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা ও অভিবাসীদের জন্য ব্যবসায়িক ও আইনগত সহায়তা প্রদান করছেন। একই সঙ্গে লন্ডনের একটি শীর্ষস্থানীয় ইমিগ্রেশন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ভিসা আবেদন, স্পন্সর লাইসেন্স ও ব্যবসা পরিকল্পনায় তার পরামর্শ অভিবাসী সমাজকে এগিয়ে নিচ্ছে।
মানবিক উদ্যোগ ও দৃষ্টিভঙ্গি
কৈশোর থেকে সমাজসেবায় যুক্ত আমিনুল ইসলাম নিয়মিতভাবে মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। রক্তদান কর্মসূচি, বন্যা ও দুর্যোগে ত্রাণ বিতরণ, কোভিড-১৯ সময়ে খাদ্য সহায়তা থেকে শুরু করে সিলেটে ফুড ব্যাংকিং টিমে তার অবদান উল্লেখযোগ্য। সেইসাথে নিজের এলাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণও প্রদান করছেন, যাতে তারা আধুনিক যুগে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে পারে।
আমিনুল ইসলামের রাজনৈতিক দর্শন তিনটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে—ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। তার দৃষ্টিতে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথ।
মো. আমিনুল ইসলাম শুধু একজন তরুণ রাজনীতিক নন; তিনি একদিকে আন্দোলনের কর্মী, অন্যদিকে সমাজসেবায় নিবেদিত একজন উদ্যোক্তা ও আইন পরামর্শক। সিলেটের তৃণমূল থেকে লন্ডনের প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও ন্যায্য দাবিতে তার পথচলা প্রমাণ করে—তিনি এমন এক প্রজন্মের প্রতিনিধি, যারা পরিবর্তন, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের স্বপ্নকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমিনুল বিশ্বাস করেন- আইনের সুশাসন ও কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে একটি সুন্দর ও নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মান করা সম্ভব।