• ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটে কানাডা প্রবাসী গউছুল আলমের পরিবারের উপর নির্যাতন: ঘর ছাড়া পরিবার

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫
সিলেটে কানাডা প্রবাসী গউছুল আলমের পরিবারের উপর নির্যাতন: ঘর ছাড়া পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট সদর উপজেলার এয়ারপোর্ট থানাধীন সাহেবের বাজার এলাকার কুনিপাড়া গ্রামের কানাডা প্রবাসী ও সিলেট জেলা জাতীয় পার্টি’র সদস্য গউছুল আলমের পরিবারের উপর ভয়ভীতি, হুমকি ও নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একহয়ে তার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের না পেয়ে আত্মীয়দের কাছে হুমকি দিয়ে আসে।

একইভাবে পূর্বে আরো বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের উপর ভয়ভীতি, হুমকি ও শারীরিক মানসিক নির্যাতন চালায়। এ সময় নেতাকর্মীরা তার ঘরের রুমের ভিতর প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়া হয়।

সূত্র জানায়, দেশে থাকা অবস্থায় হামলা, মামলা ও বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়ে গউছুল আলম ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কানাডা পাড়ি জমান। তিনি কানাডা যাওয়ার পর থেকে গউছুল আলমকে না পেয়ে তার পরিবারের উপর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হিংস্র মনোভাব নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি ও বিভিন্নভাবে নির্যাতন অব্যাহত রাখে।

সূত্র আরো জানায়, স্থানীয় বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতা কয়েস লোদী ও এয়ারপোর্ট থানার অতি উৎসাহিত পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গউছুল আলমের পরিবারের উপর ক্ষতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা এখনো অনেক শক্তিশালী রয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তারা মিয়া, সোহাগ ছত্রীসহ অসংখ্য নেতাকর্মীরা একহয়ে অসংখ্যবার তার পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে হামলা ও নির্যাতনের ভয়ে তার পরিবার আত্মগোপনে থাকার কারনে গউছুল আলমের ছেলে মেয়ে স্কুল কলেজে যেতে পারতেছেনা। ফলে তাদের লেখাপড়ার মারাত্মক অফুরন্ত ক্ষতি হচ্ছে।

তার পরিবারের উপর নির্যাতন চলমান থাকা অবস্থায় গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্থানীয় বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সাথে হাত মিলিয়ে গউছুল আলমকে শিক্ষা দিতে চায়। এখন স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এক হয়ে তার পরিবারের উপর অত্যাচার ও নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্যাতনের ভয়ে গউছুল আলমের পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছেন। নেতাকর্মীদের ভয়ে ঘর ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনযাপন পার করছেন

এ ঘটনার বিষয়ে গউছুল আলমের স্ত্রী তানিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এক হয়ে তাদের উপর প্রতিনিয়ত অমানুষিক নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। এদিকে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় বিএনপি নেতাদের চাপে বাধ্য হয়ে দফায় দফায় আমার বাড়িতে এসে তল্লাশির নামে হয়রানি করতেছে। তাদের ভয়ে এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। তাদের ভয়ে আমি বাড়ি ছাড়া হয়ে আমার ছেলে মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানায় বেশ কয়েকবার সাধারণ ডায়েরি জিডি করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহন করেনি। এই অবস্থায় আমি আমার ছেলে মেয়েকে নিয়ে খুববেশী আতংকে আছি। আমরা এখন ঘরবাড়ি ফেলে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আনিছুর রহমানের সাথে সরাসরি আলাপকালে তিনি জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরথেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হয়েছে। আমি ঘটনার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবো। পুলিশ গউছুল আলমের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের উপর হয়রানি করেছে যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা আমি তদন্ত করে দেখবো। এর বাহিরে অন্য বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তার উত্তর দিতে রাজি হননি।