• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষণের অভিযোগে ধর্মপাশায় আ.লীগের দুই নেতার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ১৩, ২০২০
ধর্ষণের অভিযোগে ধর্মপাশায় আ.লীগের দুই নেতার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ এক নারীকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে জোর পূর্বক ধর্ষণ করার দায়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ মুরাদ ও তার ঘনিষ্ট বন্ধু রেজুয়ান আলী খান আর্নিকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালণ করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাজ উদ্দিন আহম্মেদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাকির হোসেন সাগর, উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মোহন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন চৌধুরী, বাদশাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি আতিক খান, সেলবরষ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী, সেলবরষ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন তালুকদার, পাইকুরাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহরাব হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা অলি মাহমুদ খান টিটু প্রমূখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, উপজেলা আ,লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ মুরাদ ও তার ঘনিষ্ট বন্ধু মোহনগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা কেন্দ্রিয় মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজুয়ান আলী খান আর্নিক তারা দুইজন এক জোট হয়ে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এলাকার সহজ-সরল মেয়েদেরকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যায় এবং সেখানে নিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েই তারা ক্লান্ত হয়না। তারা ওইসব অনেক মেয়েকেই বেকায়দায় ফেলে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে স্বর্বশ্ব লুটে নেয় বলেও তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা বিভিন্ন দালালী তদবীর নিয়ে মাসের পর মাস ঢাকায় পরে থেকে তারা দুইজনই বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

বক্তারা আরো বলেন, চাকুরী দেওয়ার কথা বলে আমাদের নিজ এলাকার এক নারীকে গত ১ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা দুইজনে মিলে তাদের ঢাকার একটি অফিসে নিয়ে যান এবং সেখানে তারা ওই নারীকে একা পেয়ে তার সাথে জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন চালান। পরে এ বিষয়ে ভূক্তভোগী ওই নারী বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালতে মামলা দায়ের করলে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ও টিভিতে খবর প্রকাশ পায়। আর তাদের জন্য আজ সারা দেশবাসীর কাছে আমাদের দলে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তাই আজ আমরা ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ওই দুই চরিত্রহীন নেতাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করাসহ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজওয়ান আলী খানসহ দুজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এর আদালতে ভুক্তভোগী সেই নারী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপর আসামি হলেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিম আহমেদ মুরাদ।

এর আগে ভুক্তভোগী সেই নারীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। পরে ভাটারা থানাকে মামলার এজাহার গ্রহণ করার নির্দেশ দেন
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি শামীম আহমেদ মুরাদ ও রেজওয়ান আলী খান পরস্পর একই দলভুক্ত ও একজোট। তারা নারী দেহলোভী, দুষ্ট, লম্পট শ্রেণির লোক এবং নারীর দালাল ও শক্তিশালী চক্র। মামলার বাদিনী স্বল্পশিক্ষিত বিধায় তিনি যোগ্যতা অনুযায়ী অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। বৈশ্বিক মহামারির কারণে এর আগের কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত না হওয়ায় অর্থনৈতিক দৈনকষ্টে দিনযাপন করছিলেন। এর আগের কাজের সুবাদে বাদিনীর সঙ্গে মুরাদের পরিচয় হয়। গত ২৭ অক্টোবর বাদিনী চাকরির আশায় মুরাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চাকরি দেওয়ার আশা দিয়ে নারীকে রেজওয়ান তার অফিসে সাক্ষাৎ করতে বলেন।

এরপর বাদিনী কাজ পাওয়ার উদ্দেশ্যে গত ১ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেই অফিসে যান। সেখানে তিনি মুরাদকে দেখতে পান। কিন্তু তার দেওয়া ঠিকানায় কোনো অফিস পাননি তিনি। ওই ঠিকানা একটি ফ্ল্যাট বাসার ছিল। এরপর মুরাদ তাঁকে বলেন, স্যার (রেজওয়ান) ভেতরের রুমে আছেন। এরপর বাদিনী রুমে প্রবেশ করা মাত্রই কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার ওপর দুই আসামি ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তার ওপর পাশবিক ও যৌন নির্যাতন চালান।