মৌলভীবাজার প্রতিনিধি::
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সিংকাপন গ্রামে মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আব্দুল মুমিন চৌধুরী ও সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সদস্য, বর্তমান ৬নং একাটুনা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাছরুর চৌধুরী তুহিনের বাড়িতে প্রতিপক্ষ মৌলভীবাজার সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিছবাউর রহমান, ৬নং একাটুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে তার পালিত অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন সন্ত্রাসীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পুরো বাড়ি পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায়। কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়। গত ১১ ফেব্রæয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আব্দুল মুমিন চৌধুরী ও মাছরুর চৌধুরী তুহিনের মা, বড়বোন, ভগ্নিপতি, তাদের প্রতিবন্ধি ভাই ও ভাগনা রাব্বি শাহ আহত হন। তাদের মধ্যে ভাগনা রাব্বি শাহ এর শরীর মারাত্মক ভাবে পুড়ে যায়। তাকে তাৎক্ষণিক ঢাকাস্থ শেখ হাসিনা বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ ফেব্রæয়ারি সে মারা যায়। এছাড়াও বাকী আহতদের স্থানীয় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
আব্দুল মুমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, অগ্নিকান্ডের সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তার ভাই মাছরুর চৌধুরী তুহিন দীর্ঘদিন থেকে মিথ্যা মামলায় পলাতক রয়েছেন। মুলত তাদেরকে পুড়িয়ে হত্যার উদ্দেশ্যেই প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান, মিছবাউর রহমান, আবু সুফিয়ান চেয়ারম্যান অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটায়। সৌভাগ্যবশত তারা বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান, মিছবাউর রহমান ও আবু সুফিয়ান চেয়ারম্যানের সাথে দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুবদল নেতা আব্দুল মুমিন চৌধুরী ও যুবদল নেতা মাছরুর চৌধুরী তুহিনের সাথে দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলে আসছিল। তাদের কারণেই মৌলভীবাজার সদর থানা এলাকায় বিএনপির ঘাটি ঘেড়েছিল। এর জের ধরেই তাদের নিঃশেষ করে দিতে অগ্নিকান্ডের মতো ঘৃন্য ঘটনার জন্ম দেয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
এ ঘটনায় মৌলভীবাজার সদর থানা পুলিশ সাংবাদিকদের জানায়, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৯ বছরের শিশু রাব্বী শাহ মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে পোষ্ট মর্টেম শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- রাজনৈতিক কারণে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে, কে, বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নিহত রাব্বি শাহ এর পিতা সদর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা ওয়াহিদ শাহ বুক ফাটা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার এই নিষ্পাপ শিশুর কি দোষ ছিল। রাজনৈতিক দাঙ্গা-হাঙ্গামার কারনে আমার ছেলেকে নানা বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে মরতে হয়েছে। জানি- এ বিচার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হবে না, তবুও আমি এর বিচার চাই।
মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আব্দুল মুমিন চৌধুরী ও সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সদস্য, বর্তমান ৬নং একাটুনা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাছরুর চৌধুরী তুহিনের বাড়িতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাছের চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান।
নেতৃবৃন্দ নিহতের জন্য শোক প্রকাশ ও আহতদের দ্রæত সুস্থতা কামনা করেছেন। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান তারা।