• ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি রুনু মিয়ার কাছে জিম্মি শ্রমিকরা,স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

admin
প্রকাশিত আগস্ট ১৯, ২০২০
শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি রুনু মিয়ার কাছে জিম্মি শ্রমিকরা,স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

ডেস্ক:: একসময় জীবীকা নির্বাহের জন্য বেবীটেক্সীই ছিল একমাত্র অবলম্বন। দিন-রাত বেবীটেক্সী চালিয়ে কোনোরকমে চলতো সংসার। অন্যের বেবীটেক্সী ভাড়ায় চালিয়ে একসময় জীবিকা নির্বাহ করলেও এখন রাতারাতি পাল্টে গেছেন তিনি।এখন তিনি বেবীটেক্সি না চালিয়ে কয়েকলাখ টাকা মূল্যের কেনা নিজের বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে ছোটে বেড়ান সর্বত্র। শুধু গাড়ি নয়-এখন নিজের নামে বাড়িও রয়েছে একাধিক।

শ্রমিক থেকে শ্রমিক নেতা হওয়ার পর পরই পাল্টে যায় জীবনের মোড়। হাতে আসতে থাকে কাড়ি কাড়ি টাকা। সেই টাকার একটি অংশ ব্যয় করে বাহিনীও তৈরি করেছেন তিনি। এই বাহিনী দিয়ে ভয়-ভীতি, চাঁদাবাজি এবং হুমকী দিয়েই উত্থান একজন সাধারণ শ্রমিকের।

অতি সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে উঠা এই শ্রমিকের নাম রুনু মিয়া মঈন। তিনি সিলেট জেলা ইমা-লেগুনা শ্রমিক ইউনিয়ন (১৩২৬) এর সভাপতি। শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হলেও জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতিকেও উঠ-বস করতে হয় রুনু মিয়ার কথায়। অবাধ্য হলেই শ্রমিক লেলিয়ে দিয়ে মালিক সমিতির গাড়ি ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়। মালিক সমিতি এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে গাড়ি অবৈধ দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয় পুলিশে। সেই মামলা টাকার বিনিময়ে আবার রুনু মিয়াই নিস্পত্তি করে দেন। এক কথায় রুনু মিয়ার কাছে জিম্মি পুরো জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতি।

শ্রমিকদের দাবি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জেলা ইমা-লেগুনা শ্রমিক ইউনিয়ন (১৩২৬)। এরপর থেকেই রুনু মিয়া মঈন জড়িত থেকে এই সংগঠন থেকেই নিজেকে তিল থেকে তাল করেছেন। অবশ্য, এ ব্যাপারে রুনু মিয়ার দাবি ‘শুরু থেকে আমি এই সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলামনা। ২০০৫ সালের আগে যুক্ত হয়ে প্রথম নির্বাচন করে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হই। সেই থেকে শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে জড়িত রয়েছি আমি ’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানালেন, রুনু মিয়ার স্বেচ্ছাচারিতার কাছে জিম্মি পুরো শ্রমিক সমাজ। শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের চেয়ে তিনি বরাবরই নিজের আখের গোচাতে ব্যস্থ। ফলে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের অন্তর্দ্বন্দ্বের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন শ্রমিকরা। এই অবস্থায় গাড়ি চালাতে গেলেও বিপদে পড়তে হয়। রুনু মিয়ার বাহিনীর চাঁদা আদায় যথারীতি অব্যাহত রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে রুনু মিয়া মঈনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রায় দেড় দশক আগে জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতি গড়ে উঠলেও বর্তমানে সেই সংগঠনের কার্যক্রম নেই। কিন্তু গেলো বছর হঠাৎ করেই জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতি নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। এরপর থেকে সংগঠনের কোনো কার্যক্রম চোখে না পড়লেও সম্প্রতি এই সংগঠনের নামে একটি চক্রকে মাঠে দেখা গেছে। তিনি বলেন, শ্রমিক সংগঠনের সাথে মালিক সংগঠন থাকলে তো ভালো। কিন্তু সেই সংগঠনের বৈধতা থাকতে হবে। তিনি জমির-আকবর প্যানেলের সমিতিকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই কমিটি কখনোই শ্রমিকরা মেনে নিবেনা।
এদিকে, রুনু মিয়ার বক্তব্যের সাথে একমত নন অধিকাংশ শ্রমিক। তাদের দাবি- মালিক সমিতি যখনই শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে, ঠিক তখনই রুনু মিয়ার আঁতে ঘা লাগে এবং মালিক সমিতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করতে থাকেন।
সূত্র: সিলেট আই নিউজ