নিজস্ব প্রতিবেদক::
সিলেটের শীর্ষ শিবির ক্যাডার একাধিক মামলার আসামী ইয়াহিয়া আহমেদ এখনও পলাতক রয়েছেন। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানা ও তার জন্মস্থান কানাইঘাট থানা সহ একাধিক থানায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী হয়েও তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে মামলা গুলো হলো: এসএমপির কোতোয়ালী থানার মামলা নং- ২৫/৫২(২০১৩), জিআর মামলা নং- ৫২/২০১৩, ধারা: ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৪২৬/ ৩০৭/১১৪/৩৪, ওসমানীনগর থানার মামলা নং- ০৯/২০১৩, জিআর নং- ৬২/২০১৩, ধারা: আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন সংশোধনী ২০১০ এর ৪(১), কানাইঘাট থানার মামলা নং- ৩৫/২০১৩, জিআর ৮২/২০১৬, ধারা: ১৪৩/৩৪১/৩২৩/ ৩২৪/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, ইয়াহিয়া একজন শীর্ষ শিবির ক্যাডার। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছে। প্রশাসনের কড়া নির্দেশনা রয়েছে- যেখানেই তাকে পাওয়া যাবে, সেখানেই গ্রেপ্তার করা হবে।
জানা যায়, গত ২৬/০৩/২০১৩ইং তারিখ সকাল প্রায় ১১টার দিকে কানাইঘাট থানা ছাত্র শিবিরের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ইয়াহিয়া আহমেদ এর উদ্যোগে কানাইঘাট উপজেলা চত্বরে আওয়ামী লীগ সরকারের ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় নেতৃত্ব দেন শিবির ক্যাডার ইয়াহিয়া আহমেদ। ওই সময় নির্বাচনের পক্ষে ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালামের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল কানাইঘাট বাজার পয়েন্ট অভিমুখে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌছে কাদানো গ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ইয়াহিয়া সহ অনেক শিবির কর্মী আহত হন। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পরে এ ঘটনায় কয়ছর আহমদ বাদী হয়ে শিবির ক্যাডার ইয়াহিয়া আহমেদকে প্রধান আসামী করে ও ৮ জনের নামোল্লেখ করে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- কানাইঘাট থানার মামলা নং- ৩৫/২০১৩, জিআর ৮২/২০১৬, ধারা: ১৪৩/৩৪১/৩২৩/ ৩২৪/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪।
এর আগে গত ২৮/০২/২০১৩ইং তারিখ সকাল সাড়ে ৬টায় সিলেটের ওসমানীনগর থানার গোয়ালাবাজার পয়েন্টে বিএনপি-জামায়াতের হরতারের সমর্থনে মিছিল বের করে ছাত্র শিবির। ৩০-৪০ জন জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করে ত্রাশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে। কিন্তু এর আগেই জামাত-শিবিরের মিছিলটি শেষ হয়ে যায়। পুলিশ আশপাশের লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, ড্রাইভার ফরিদ মিয়ার ঢাকাগামী বাস (যার নং- সিলেট-জ-১১-০১০৭) ভাংচুর করে মিছিলের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় থানার এসআই বাদী মমিনুল হক বাদী হয়ে ইয়াহিয়া আহমেদ কে ২য় আসামী করে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং – ওসমানীনগর থানার মামলা নং- ০৯/২০১৩, জিআর নং- ৬২/২০১৩।
এদিকে গত ২০/০২/২০১৩ইং তারিখে সিলেট মহানগরীতে সিলেট জেলা ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি জিন্দাবাজার পয়েন্টে আসা মাত্র ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিলে বাঁধা দেয়। এসময় ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে অনেকেই আহত হন। আশপাশের দোকান পাঠ ভাংচুর সহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় ইয়াহিয়া আহমেদ কে প্রধান আসামী করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম। এসএমপির কোতোয়ালী থানার মামলা নং- ২৫/৫২(২০১৩), জিআর মামলা নং- ৫২/২০১৩, ধারা: ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৪২৬/ ৩০৭/১১৪/৩৪।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। যেগুলো তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ সাইফুল আলম বলেন, ইয়াহিয়া আহমেদ শিবিরের একজন শীর্ষ ক্যাডার। গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে। পুলিশের উর্ধ্বতন মহল থেকে নির্দেশ এসেছে- ইয়াহিয়াকে যেখানে পাবে সেখানেই গ্রেপ্তার করবে।