একুশে নিউজ ডেস্ক:: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ধ্বংস করার জন্য যা কিছু করা দরকার সবকিছুই করেছেন জিয়া। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাহাজ কিনেছিলেন হজ করার জন্য। জিয়াউর রহমান সেটাকে প্রমোদতরী বানিয়েছিলেন। সেখানে ছাত্রদের নিয়ে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য তিনি এসব কাজ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন। অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করেছেন নির্মমভাবে। অনেকের লাশ গুম করে দেয়া হয়েছে। আজ যারা গুমের কথা বলে তাদের বলব, হত্যা-গুম জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন। জিয়া ও তার স্ত্রী এবং ছেলে সবার হাতে রক্তের দাগ। এদের তো কোনো শিক্ষাদীক্ষা নেই। সে কারণে ক্ষমতাকে তারা ভোগের বস্তু হিসেবে দেখে। সে কারণে ক্ষমতায় থাকতে, ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে এবং খুন করতে তারা কোনো দ্বিধাবোধ করেনি। কিন্তু আমরা সেটা করি না, আমরা ক্ষমতাকে দায়িত্ব মনে করি। এ কারণেই ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন এই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে।
তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, মানুষের পাশে থাকতে হবে বিপদে-আপদে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। ধান কাটার সময় তোমরা কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে ধান কেটে তাদের ঘরে পৌঁছে দিয়েছ, এ জন্য তোমাদের ধন্যবাদ। এ জন্য আমি খুব আনন্দিত। সারাদেশের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কোনো কাজই অবহেলা নয়, এটা তারা প্রমাণ করেছে। বন্যার সময় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এই ছাত্রলীগ কর্মীরা সহযোগিতা করেছে। আজ করোনাকালে লাশ দাফন করছে। ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করছে। যারা হাত পেতে সাহায্য চাইতে পারে না ছাত্রলীগের কর্মীরা গোপনে গিয়ে তাদের সহযোগিতা করেছে। এভাবেই তোমাদের কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা নেবে।
তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে আমরা ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আগে মাত্র একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, আমরা আরও কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি। কৃষির ওপর গবেষণার জন্য আমরা আলাদা বরাদ্দ রেখেছি। সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। গবেষণা না করলে আমরা এগোতে পারব না, এ কথা আমাদের ভাবতে হবে। এ সব বিষয় চিন্তা করেই আমরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করেছি। আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে বহুমুখী শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা স্যাটেলাইট, সাবমেরিন ক্যাবল দিচ্ছি, প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে আমরা নেটওয়ার্ক তৈরি করে দিয়েছি, যাতে ছেলেমেয়েরা কম্পিউটারে শিখতে পারে। গ্রাম পর্যায়ের মেয়েরা এখন আউটসোর্সিং করে পয়সা ইনকাম করছে।
সোমবার বিকেলে ‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ (ভার্চুয়াল) করে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান জয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।