স্টাফ রিপোর্ট::
৪ বছরের প্রেম, বিয়েও হয়, পূর্ণতা পায়। ভালই চলছিল জাকারিয়া-রাজনার দাম্পত্য জীবন। সুখের এই সংসারে হঠাৎ করে নেমে আসে অন্ধকার ছায়া। জাকারিয়া যৌতুক চেয়ে বসে রাজনাকে। রাজনা বারবার যৌতুক দিতে অপরাগতা জানান। অবশেষে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩১ জানুয়ারি রান্না ঘরের বটি দিয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী রাজনাকে হত্যা করে পাষন্ড স্বামী জাকারিয়া।
বিভৎষ এ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে র্যাব-৯। আজ শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) র্যাব-৯ এর এএসপি (মিডিয়া অফিসার) সোমেন মজুমদার প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ৩১ জানুয়ারি রাজনা বেগম নিহতের ঘটনায় তার ভাই সুফি মিয়া নবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে হত্যা ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় র্যাব-৯ এর চৌকষ টিম।
র্যাব জানায়, রাজনা বেগমের স্বামী জাকারিয়া একজন সিএনজি চালক। সিএনজি কেনার জন্য তিনি বারবার রাজনা বেগমকে তার বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু রাজনা বেগম টাকা দিতে অপরাগতা স্বীকার করলে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩১ জানুয়ারি রান্না ঘর থেকে ধারালাে বটি নিয়ে এসে স্ত্রীর গলা কেটে হত্যা করে ঘরের বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানা এলাকার শতাব্দি নামক এলাকা থেকে জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯।
র্যাব জানায়, রাজনাকে হত্যার পর পালিয়ে যান জাকারিয়া। প্রথমে তিনি বাসে করে ঢাকা চলে যান আত্মগোপন করতে। কিন্তু সেখানে আত্মগোপনের কোন ব্যবস্থা করতে না পারায় তার সাবেক কর্মস্থল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার শতাব্দি এলাকায় যান। সেখানে তিনি আত্মগোপন করেন।
র্যাব খবর পেয়ে গতকাল রাত ১১টার দিকে জাকারিয়াকে শতাব্দি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। জাকারিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার বড় আলীপুর গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে। তার স্বীকারোক্তিতে বাকী ২য় ও ৩য় আসামীকেও গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৯।
উল্লেখ্য, নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ বাজারে শফিক মিয়ার ভাড়া বাসায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাজনার গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে নবীগঞ্জ থানাপুলিশ। বিয়ের ৪ মাসের মাথায় সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ বাজারে ভাড়াটিয়া বাসা থেকে রাজনা বেগম (২০) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। রাজনার স্বামী জাকারিয়া (২৩) সদর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে। জানা যায়, গত ৩-৪ মাস পূর্বে পরিবারের সম্মতিক্রমে জাকারিয়া ও রাজনার বিয়ে হয়। তারপর ভালোই সংসার চলছিল তাদের। গত ৭-৮ দিন আগে রসুলগঞ্জ বাজারে শফিক মিয়ার বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে তারা আসে দুই জন। ঘটনার দিন বিকালে সাড়ে ৫ টার দিকে রাজনার মা তাকে দেখতে আসলে দরজা বন্ধ দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকি করেও না শুনায় দরজার ফাঁকে দিয়ে থাকিয়ে দেখেন তার মেয়ের লাশ পড়ে আছে বিছানার মধ্যে। পরে চিৎকার করলে মানুষ এসে নবীগঞ্জ থানায় খবর দিলে থানাপুলিশ এসে দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে।