একুশেনিউজ::
যাদের কাজ প্রতিনিয়ত প্রতারিত ভোক্তাদের পাশে দাঁড়ানো, তারা নিজেরাই এখন আছেন চরম সংকটে। অপর্যাপ্ত জনবল আর সুযোগ-সুবিধার অভাবে প্রতারিত ভোক্তাদের প্রতিকারের ব্যবস্থাও করতে পারছেন না তারা। এসব সংকটের কারণে নিয়মিত বাজার তদারকি করতেও ব্যঘাত ঘটছে। এ অবস্থায় চলছে সিলেট জেলা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যক্রম।
এমনকি একজন সহকারী পরিচালক ও একজন অফিস সহকারী দিয়েই চলছে পুরো জেলার নিয়ন্ত্রণ।
সিলেট জেলায় মোট ১৩ টি উপজেলা রয়েছে। আর এসব উপজেলার বাজারগুলো তদারকি করতে হয় একজন কর্মকর্তা দিয়েই। ফলে সঠিকভাবে হচ্ছেনা বাজার মনিটরিং।
জেলা ভোক্তা অধিকার অফিস সুত্র বলছে, বাজার মনিটরিংয়ে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে তারা। পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় মাত্র দুইটি টিম দিয়ে পুরো জেলার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। যেখানে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ টি টিম থাকার কথা। এছাড়া যাতায়াতের জন্য নেই কোন গাড়ি। আর পণ্যের মান পরীক্ষার জন্য নেই কোন ল্যাব। কেবল লোক দেখানো হিসেবেই দায়িত্ব পালন করতে হয় সংশ্লিষ্টদের।
জেলা ভোক্তা অধিকার অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, আসছে রমজানকে ঘিরে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার অভিযোগ আসছে তাদের কাছে। চলতি মাসে অন্তত ৩০ টি ফোন পেয়েছেন তারা। তবে এ বিষয়ে কিছু করার নেই তাদের, কারণ এটা জাতীয় ইস্যু। বাজার মনিটরিং করে দাম কমানো সম্ভব না। মনিটরিং করে শুধু পণ্য বাড়তি মজুদ, কারসাজি এগুলো নিয়ন্ত্রনে আনা যায়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সিলেটের সহকারী পরিচালক আমিরুল মাসুদ বলেন, ‘আমাদের এখনে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। অভিযোগ নেয়ার পর নিজস্ব গবেষণাগার না থাকায় অন্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগীতা নিতে হয়। আর এজন্য চাইলেও সবকিছু করা সম্বব হচ্ছে না। নিজস্ব যানবাহন না থাকায় সময়যেমন নষ্ট হচ্ছেতেমনি অভিযোগকারীর কাছেও দ্রুতপৌঁছতে পারছি না। এসব নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি।’
এদিকে রমজান মাসকে কেন্দ্র করে সিলেট বাজারে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। বেড়েছে চাল, ডাল, পেয়াজ, মাছ, ডিম, মুরগিসহ বিভিন্ন সবজির দাম।
সংসারে অপরিহার্য এসব পণ্য বাজারের চেয়ে কম মূল্যে কিনতে টিসিবির ট্র্রাকসেলে বাড়ছে মানুষের ভীড়। সেখানে কেবল শ্রমজীবি নয়, মধ্যবিত্ত, নিন্ম মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। তারা বাজারের তালিকা বারবার কাটছাঁট করেও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
সিলেট ট্রেড সেন্টার ভেজিটেবল মার্কেট সমিতির সভাপতি তুরন মিয়া বলেন, বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার নানা কারণ আছে। এখন সবকিছুর দাম বাড়তি। আর রমজান সামনে রেখে পাইকারি বাজারে অনেক পণ্যের মূল্য কমে এসেছে।
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সিলেটে তাদের বাজার মনিটরিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কৃত্রিমভাবে বাজারে সংকট তৈরীর চেষ্টা হলে তা কঠোর ভাবে দমন করা হবে।