• ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ব্যবসায়ীকে অপহরণ: শিবগঞ্জ থেকে ছাত্রদল নেতা আফজল গ্রেপ্তার

admin
প্রকাশিত জুন ৩, ২০২২
ব্যবসায়ীকে অপহরণ: শিবগঞ্জ থেকে ছাত্রদল নেতা আফজল গ্রেপ্তার

একুশেনিউজ ডেস্ক::
সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ থেকে ব্যবসায়ীকে অপহরণকারী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক আফজল হোসেইনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় শিবগঞ্জস্থ তার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আফজল হোসেন টিলাগড়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত তানিম হত্যা মামলারও ওয়ারেন্টভুক্ত ৬নং আসামী। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মাদক, অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেপ্তারকৃত আফজল হোসেন শাহপরাণ থানাধীন লাকড়ীপাড়া রংধনু গ্রামের ময়না মিয়ার পুত্র। শাহপরাণ থানায় অপহরণ মামলা নং- ০৫/১৩৯ (০২.০৬.২০২২ইং)। আফজল ওই মামলার ৩নং আসামী। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামের মৃত শ্যামকান্ত গোপের পুত্র শ্যামল কান্ত গোপ, সিলেট নগরীর সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা আলী, রুবেল ও রাসেল।

জানা যায়, মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন কাকলি শপিং সেন্টার ২য় তলার ফ্যাশন ওয়ানের স্বত্তাধিকারী ও কাকলি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য। তিনি বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে কাপড় সংগ্রহ করে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করেন। ১নং আসামী শ্যামল কান্ত গোপও কাপড়ের ব্যবসায়ী এবং সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর বাজারে ঝলক ফ্যাশন নামে কাপড়ের দোকান রয়েছে। বাদী ও ১নং আসামী একে অন্যেও কাছে কাপড় ক্রয়-বিক্রয় করেন। গত ঈদের আগে ১নং আসামী বাদীর নিকট কিছু লেডিস আইটেমের কাপড় দেয়। বাদী সেগুলো বিক্রি করে কিছু টাকা পরিশোধ করেন। তবে আরও কিছু কাপড় রয়ে যায়। ব্যবসায়ীক লেনেদের অংশ হিসেবে ১নং আসামী বাদীর নিকট ৮,৭৭,৬১০ টাকা পাওনা আছে। ৪নং আসামী রুবেল এর সাথে পরামর্শ করে পাওনা টাকা সহ আরও কিছু টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বাদীকে অপহরণ করতে ১নং আসামী গ্রেফতারকৃত আসামী আফজল হোসেনসহ আসামী আলী, রাসেল ও আরও কয়েকজনের সাথে চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী গত ২৯ মে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আসামী আলীর ব্যবহৃত (০১৭১২৪৫৪২৮৯) মোবাইল ফোন থেকে বাদীর ব্যবহৃত (০১৭৩৪-৯১৫৭২৩) নাম্বারে কল দিয়ে দেখা করার জন্য বলে। দিলোয়ার হোসেন দুপুর ১টার দিকে শাহপরাণ থানাধীন শিবগঞ্জস্থ ফেয়ার টাওয়ারের সামনে যাওয়া মাত্র পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী আফজল হোসেন, আলী, রাসেল সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২ জন আসামী দিলোয়ার হোসেনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি নোহা গাড়িতে করে অপহরণ করে সুনামগঞ্জ জেলা জগন্নাথপুর থানাধীন ১নং আসামীর দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং পথিমধ্যে একটি স্থানে আসামী রুবেল গাড়িতে উঠে। আসামীরা ১নং আসামীর ঝলক ফ্যাশনের ৩য় তলায় একটি নির্জন কক্ষে বাদীকে লুকিয়ে রাখে এবং লেনদেনের বিষয়ে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বলে। এসময় তারা ৬টি অলিখিত নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক দিলোয়ার হোসেনের স্বাক্ষর নেয়। প্রায় ৭ ঘন্টা অবরোধ করে রেখে রাত অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে দিলোয়ার হোসেনকে গাড়িতে তুলে সিলেটে নিয়ে আসে। পথিমধ্যে দিলোয়ার হোসেনের মোবাইল দিয়ে তার দোকানের ম্যানেজারের মাধ্যমে ডাচ বাংলা ব্যাংকের চেক বহি ও সীল মোহর শিবগঞ্জস্থ মিতালী ফার্মেসীর সামনে নিয়ে আসার জন্য বলে। রাত ২টার দিকে ম্যানেজার আসলে ব্যাংকের চেক বহি নিয়ে আসামী আফজলের বাসায় গিয়ে ১৯টি চেকের মাধ্যমে ৪৫ লক্ষ টাকা লিখে স্বাক্ষর করতে বলে। চেকে স্বাক্ষর না দিলে গুলি করে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে। বাদী দেলোয়ার হোসেনর প্রানের ভয়ে চেক বইয়ে স্বাক্ষর দেন। পরে আইনের আশ্রয় নিলে দেলোয়ার হোসেনকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসামীরা ছেড়ে দেয়।

ছাড়া পেয়ে দেলওয়ার হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার শাহপরাণ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় রাতেই আফজল হোসেনকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর আসামীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।