প্রেস বিজ্ঞপ্তি::
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের মোহাম্মদ আব্দুল একিম ওরফে আব্দুল হেকিমের বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, নানা অপকর্ম ও সম্পত্তি দখলসহ প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ছেলে আব্দুল কালাম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে (২৩ ডিসেম্বর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হেকিমের প্রথম স্ত্রী রহিমা বেগমের ছেলে কালাম এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামের পঞ্চায়েতের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পিতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ অপরাগ হয়ে করছেন দাবি করে ছেলে কালাম জানান, তার পিতা আব্দুল হেকিম গত ২০ ডিসেম্বর ওসমানীনগরে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তুলে পারিবারিক মানসম্মান ক্ষুন্ন করেছেন। মূলত প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও মূল বিষয় জানানোর জন্য তিনি বাধ্য হয়ে পিতার কুকীর্তি তুলে ধরেছেন।
তিনি জানান, তার পিতার বয়স এখন ৭০ এর উপরে। স্বাধীনতার আগে ও পরে তিনি ৪টি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর কোনো সন্তান নেই। অপর দুই স্ত্রীর তিন ছেলে ও ২ মেয়েসহ তারা ১৩ ভাই বোন। কিন্তু উত্তরাধীকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি ৪র্থ স্ত্রী ও তার দুই সন্তান অর্থাৎ সৎ মা ও সৎ ভাই বোনকে প্রদান করছেন আব্দুল হেকিম।
কালাম জানান, তাদের অপর ভাই বোনকে বঞ্চিত করেই শুধু কান্ত হননি তার পিতা, তার দুই চাচার সম্পত্তিও জোরপূর্বক কজবর দখল করে আছেন, বিক্রিও করে দিচ্ছেন। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রামে সালিশ হলেও মানেননি তার পিতা হেকিম। উল্টা তিনি সন্ত্রাসী নিয়ে ছেলে মেয়েদের হুমকী ও হয়রানী করছে।
আবুল কালাম তাদের বিশাল ভূসম্পত্তি রয়েছে উল্লেখ করে জানান, উত্তরাধীকার সূত্রে প্রাপ্ত ভুমি বাটোয়ারার জন্য আদালতে মামলা (নং-১৩/০৯) করলে সহকারি জজ আদালত বালাগঞ্জ তার পিতা ও সৎ দুই ভাইয়ের প্রত্যেককে ২.৯৬ একর ভুমির হিস্যা প্রদানে রায় দেন। কিন্তু সেই রায় তিনি মানেন নি। তিনি ২.৯৬ একর ভুমির মালিক হলেও চতুর্থ স্ত্রী সন্তানদের প্রতারণা করে ৪ একর ভুমি দান করে দিয়েছেন।
কালাম আরও জানান, তার চাচা ছামির উদ্দিনের স্ত্রী সিতারা বেগমের কাবিনের সাড়ে তিন একর জমির একাংশ জালিয়াতি করে বিক্রি করে দিয়েছেন হেকিম। এ বিষয়ে ছামির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে জমি আত্মসাৎ, গাছ কর্তন ও হামলার ঘটনায় মামলাও করেছেন।
কালাম তার বক্তব্যে আরও জানান, তাদের পরিবারের প্রায় সকলেই যুক্তরাজ্য ও কানাডা প্রবাসী। গ্রামে ও সিলেট নগরীতে একাধিক বাড়ি রয়েছে। অথচ তার পিতা তাদের নামে ভুমি লিখে দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে তিনি তার যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাই ফজির উদ্দিন ও কানাডা প্রবাসী ভাই ছামির উদ্দিনের ভুমি ভোগদখল করছেন। প্রবাসীরা সবসময় তাকে সহযোগিতা করে আসছেন। পারিবাকি কাজে অর্থ দিচ্ছেন, সুরোজা বেগম ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করছেন। কিন্তু পিতা আব্দুল হেকিম সব সময় নামমাত্র খরচ করে টাকা আত্মসাত করেছেন। আর এখন সব অস্বিকার করে নানা উৎপাত শুরু করেছেন। যা অনেকটা বুড়ো বয়সে ভিমরতির মত।
এক প্রশ্নের জবাবে কালাম জানান, তার পিতার কারণে প্রবাসী সৎ ভাই আব্দুল গনি ও আব্দুল ওয়াহাব মনিসহ অন্য প্রবাসী ও দেশে অবস্থানরত স্বজনরা মুখ দেখাতে পারছেন না। সবাই তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি তার প্রথম স্ত্রী রহিমা বেগমকে মারার জন্য রড নিয়ে বাড়িতে ঘুরাঘুরি করছেন। গত ৫০ বছর ধরেই তাকে নির্যাতন করে আসছেন। তার অনুমতি ছাড়া একাধিক বিয়ে করেছেন। কালাম তার পিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থ গ্রহনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, খালাতো ভাই শাহ জাহান, গ্রামের মুরব্বি মানিক মিয়া, সানাওর আলী, জামাল মিয়া, আনহার মিয়া, মশরফ উল্লাহ প্রমুখ।