নিজস্ব প্রতিবেদক::
বন্যার পানি কমছে। তবে সুরমা কুশিয়ারা এখনো বিপৎসীমার উপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। অন্তত পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া হিসাব তাই বলছে। কুশিয়ারা এখনো তিনটি পয়েন্টেই বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সুরমা সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচেই আছে। তবে কাইনাঘাট পয়েন্টে এখনো উপরে।
কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ পয়েন্টে পানি কমেছে প্রায় ১৮ সেন্টিমিটার। এ সময়ে কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা বইছিল বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
সুরমা সিলেট পয়েন্টে অবশ্য বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ পয়েন্টে সুরমা বইছিল বিপৎসীমার শূণ্য দশমিক সাত সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ৬টায় বইছিল প্রায় ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। এ পয়েন্টে পানি কমেছে প্রায় ১৭ সেন্টিমিটার।
এদিকে কুশিয়ারা কিন্তু এখনো প্রায় সবগুলো পয়েন্টেই বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমছে। সুরমার তুলনায় কুশিয়ারার পানি কমছে অবশ্য অনেকটাই ধীর গতিতে।
শুক্রবার কুশিয়ারা আমলশীদ পয়েন্টে বইছিল বিপৎসীমার প্রায় ৮৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত বইছিল ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। মানে এ পয়েন্টে ২৪ ঘন্টায় পানি কমেছে ২৩ সেন্টিমিটার। সন্ধ্যা ৬টার হিসাবটা দিতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট শাখা।
এদিকে শেওলা পয়েন্টে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পানি বইছিল বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ পয়েন্টে কুশিয়ারা বইছিল ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। পানি কমেছে প্রায় ৬ সেন্টিমিটার। তবে এ পয়েন্টে বিকেল ৩ ও সন্ধ্যা ৬টার হিসাব দিতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুশিয়ারার পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও কিছুটা কমেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ পয়েন্টে নদীটি বইছিল বিপৎসীমার প্রায় ১ মিটার উপর দিয়ে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বইছিল প্রায় ৯৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
এছাড়া কুশিয়ারা শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে বইছে এবং পানি কমছে। সিলেটের অপর তিন নদী লোভা, ধলাই ও সারির পানি কমছে এবং প্রতিটি পয়েন্টে নদীগুলো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট বিপর্যস্ত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ ও তার দলবল দায়সারা গোছের কর্মতৎপরতা চালিয়েই যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের কাছে কথা দিলেও তাদের মধ্যে তেমন কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। যেমন, তারা ফ্লাড কন্ট্রোল রুমের একটি নম্বর প্রতিদিনই গণমাধ্যমে সরবরাহ করছেন। এই নম্বরে কল দিলে ওই কর্মকর্তা জানান, গত নভেম্বরে তিনি কুমিল্লায় বদলি হয়েছেন। আসিফ সিলেট প্রতিদিনকে কথা দিয়েছিলেন, এটি পরিবর্তন করবেন। তবে আজ প্রায় দু’সপ্তাহ হতে চললেও আসিফ তার কথা রাখেন নি। নম্বরটি এখনো তারা প্রতিদিনই সরররাহ করে যাচ্ছেন। তাছাড়া দু’ বছর আগে পাউবো’র চাকরি ছেড়ে বিদেশ যাওয়া একজন কর্মকর্তার নাম ও নম্বর এখনো তিনি গণমাধ্যমকে দিয়েই যাচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডেরই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের দাবি, আসিফ এমনই। তিনি যে জনগনের চাকরি করেন, সেটা মোটেও মনে করেন না। বরং জনগনই তার চাকরি করে বা পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট শাখাটিকে তার ব্যক্তিগত সম্পদ বলে মনে করেন।
এ ব্যাপারে নিয়মি প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও আসিফের বিরুদ্ধে এখনো কেউ কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না।
সূত্রটির দাবি, এটাই হচ্ছে আসিফের শক্তি বা পাওয়ার।