বড়লেখা প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরশহরে অবস্থিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘হাইটেক একাডেমি’র সহকারি শিক্ষক নুরুল ইসলাম এর মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। হাইটেক একাডেমির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় একাডেমির সম্মুখে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে একাডেমির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করে।
জানা যায়, বড়লেখা হাইটেক একাডেমির শিক্ষক নুরুল ইসলামকে গত ১ সেপ্টেম্বর অপহরন মামলার অভিযুক্ত আসামী হিসেবে গ্রেফতার করে বড়লেখা থানা পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর এর কন্যা ফাতেমা বেগম (১৮) কে অপহরনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফাতেমা বেগমের সাথে হাইটেক একাডেমির শিক্ষক নুরুল ইসলাম এর দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি ফাতেমা বেগমের পরিবারে জানাজানি হয়ে গেলে এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। কারণ নুরুল ইসলাম আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত (কাদিয়ানী) সম্প্রদায়ের লোক ও ফাতেমা বেগম সুন্নি মুসলিম সম্প্রদায় ভুক্ত। সুন্নি মুসলিম সম্প্রদায় কাদিয়ানীদের যেখানে মুসলিম বলে স্বীকারই করে না, সেখানে তাদের কন্যাকে কাদিয়ানী সম্প্রদায় ভুক্ত শিক্ষকের সাথে বিয়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু প্রেমতো আর জাত, ধর্ম কিংবা সম্প্রদায় কিছুই মানে না। তাই পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ের প্রচেষ্ঠা ব্যর্থ হওয়ার এক পর্যায় প্রেমিক যুগল শিক্ষক নুরুল ইসলাম ও ফাতেমা বেগম বাড়ি থেকে গোপনে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম সুন্দর বাদী হয়ে নিজ কন্যা অপহরনের দায়ে শিক্ষক নুরুল ইসলামকে একমাত্র আসামী করে বড়লেখা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে নুরুল ইসলাম ও ফাতেমা বেগমকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। পরে আদালতের মাধ্যমে শিক্ষক নুরুল ইসলামকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় এবং ফাতেমা বেগমকে তার পিতার জিম্মায় দেয়া হয়।
এদিকে হাইটেক একাডেমির শিক্ষক নুরুল ইসলাম কে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণের বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তারা কারাবন্দি শিক্ষকের মুক্তির দাবীতে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধনকারীরা অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত শিক্ষকের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।