নিজস্ব প্রতিবেদক:: করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সারাদেশের যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ছাত্রাবাস বন্ধ, তখন কি করে, কার নির্দেশে এমসি কলেজ ছাত্রাবাস খোলা ছিল। এ প্রশ্নের উত্তর এখনো মিলেনি।
ছাত্রাবাস বন্ধ থাকার কথা থাকলেও গুটি কয়েক ছাত্র কিভাবে অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্রাবাসে থাকে, এ দায়ভার কি কলেজ কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যেতে পারবে?
ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় সুনশান নিরবতা ছিল ওই এলাকা। যার ফলে ধর্ষকরা ইচ্ছেমতো তাদের ধর্ষণের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছিল স্বনামধন্য এই বিদ্যাপীঠে।
সাইফুরের রুমের মধ্যে দা, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়। যেখানে বই, খাতা, কলম থাকার কথা। এসব অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলো ধর্ষকরা।
কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে অবগত থাকার পরও কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলো না। ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলে ধর্ষকরা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে এশিয়া মহাদেশের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠকে কলঙ্কিত করতে পারতো না। কলেজ কর্তৃপক্ষ এর দায় কোনভাবে এড়াতে পারে না।
শীগ্রই ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি তুলেছে সিলেটের সর্বমহল।
করোনার সময়ে ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলেও ছাত্ররা কীভাবে থাকছে এমন প্রশ্নে হোস্টেল সুপার জামাল উদ্দিন বলেন, কলেজ ও হোস্টেল বন্ধ রয়েছে। কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী টিউশনির কথা বলে ছাত্রাবাসে উঠেছেন।
তিনি জানান, আজকের মধ্যে তাদেরকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হল না ছাড়লেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
এমসি কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ বলেন, ছাত্রাবাস বন্ধ থাকার নির্দেশ ছিল। কিন্তু কলেজের গরীর ও মেধাবী ছাত্রদের সুবিধার জন্য ছাত্রাবাস খোলা ছিলো।
তিনি বলেন, ধর্ষনের ঘটনায় জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। এছাড়াও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
গতকাল শুক্রবার সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ ভোরে শাহ পরান থানায় ধর্ষিতার স্বামী মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে গতকাল রাতে ছাত্রাবাসে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় সাইফুরের রুম থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি লম্বা দা, একটি ছুরি ও দুটি জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়। রাত ২টার দিকে নগরীর শাহপরাণ থানা পুলিশ এমসি কলেজের নতুন ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। তবে এখন পর্যন্ত
এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এতে কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধর্ষকদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলেও সাইফুর অবৈধভাবে ছাত্রাবাসে অবস্থান করছিলেন।
তিনি সহযোগীদের নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস, টিলাগড় ও বালুচর এলাকায় ছিনতাই, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাতে বন্ধ ছাত্রাবাসে নিয়মিত জুয়া ও মাদকের আসর বসাতেন এমন অভিযোগও রয়েছে সাইফুরের বিরুদ্ধে।