মো. বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা মহিবুজ্জামান চৌধুরীর আজ ৩৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী। মহিবুজ্জামান চৌধুরী ১৯২২ সালে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার কোনাসলেশ্বর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মহিবুজ্জামনা চৌধুরীর পিতা মরহুম দেওয়ান আরশদ আলী চৌধুরী ওরফে ঠাকুর মনাই চৌধুরী অবিভক্ত বাংলার শিলচর করিমগঞ্জ রাতারকুল বিয়ানীবাজার এলাকার তৎকালীন সময়ে একজন নামকরা মিরাসদার ও সালিশ ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
দেওয়ান আরশদ আলী চৌধুরীর চার পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের মধ্যে মহিবুজজামান চৌধুরী ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। তিনি আসাম পুলিশ রেঞ্জের মাধ্যমে পাকিস্তান পুলিশ বাহিনী ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে পদার্পণ করেন।
তিনি অত্যন্ত দক্ষ, স্মার্ট ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে অত্যন্ত দক্ষতার সহিত তার অর্পিত দায়িত্ব ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ন্যায়পরায়ণ ও বিচক্ষণতার সহিত দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বিভিন্ন সময় পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পদকসহ একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তিনি মহান একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীকে নিজস্ব লাইসেন্সধারী দুটি অস্ত্র, একটি লং বেরার বন্দুক ও রিভলভার দিয়ে মুক্তিবাহিনীদের সহযোগিতা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি কখনো কখনো ভালুকা ও নালিতা বাড়িতে চাকরিরত অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সরকারি অস্ত্রগার থেকে গুলাবারুদ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।
তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম প্রহরে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার কাঠালিয়া নামক গ্রামের লাল মাটির পাহাড়ের পাদদেশে, বাঁশের লাঠি দিয়ে ছাত্র জনতাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ট্রেনিং দিয়ে প্রস্তুত করেছিলেন।
১৯৮৫ সালের ১০ই এপ্রিল তিনি পাঁচপুত্র ও তিন কন্যা সন্তান সহ অনেক আত্মীয়-স্বজন গুণগ্রাহী রেখে ৬৪ বৎসর বয়সে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এই চৌকস পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুর পর তাঁকে তার নিজ গ্রামের সমাহিত করা হয়।