• ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৫শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বড়লেখার ফকিরবাজারে সংঘর্ষে আহত জসিম মিয়ার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু, দোকানপাটে হামলা

admin
প্রকাশিত মার্চ ৩০, ২০২২
বড়লেখার ফকিরবাজারে সংঘর্ষে আহত জসিম মিয়ার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু, দোকানপাটে হামলা

নিহত জসিম মিয়া (ফাইল ছবি)

বড়লেখা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলাধীন ফকিরবাজারে বণিক সমিতির নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত জসিম মিয়া (২৮) এর মৃত্যু ঘটেছে। মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার ২দিন পর ২৯ মার্চ মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে তার মৃত্যু ঘটে। জসিম মিয়ার মৃত্যুর খবরে তার পক্ষের লোকজন ঐদিন রাতেই ফকিরবাজারে প্রতিপক্ষের ৬টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাঠ করেছে। পরদিন ৩০ মার্চ নিহত জসিম মিয়ার পিতা বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

জানা যায়, ২৭ মার্চ রবিবার ফকিরবাজার বণিক সমিতির নির্বাচন চলছিল। নির্বাচনে এক পক্ষে সভাপতি প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিনের প্যানেল এবং অপর পক্ষে সভাপতি প্রার্থী আবুল হোসেনের প্যানেল। ভোটের দিন দুপুরে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে প্রথমে বাকবিতন্ডা ঘটে, একপর্যায় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে দেশীয় অস্ত্র দা, লাঠি, চাকু, লোহার রড ও ইটপাটকেল দিয়ে হামলা পাল্টা হামলা চালায়। এক পর্যায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে প্রায় ৯জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়। তন্মধ্যে, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিনের ভাতিজা জসিম মিয়া গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঐ হাসপতালে ২দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর ২৯ মার্চ বেলা ৩টার দিকে জসিম মিয়ার মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর খবর জানার পর ফকিরবাজার এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিপক্ষের লোকজন বাজারের দোকানপাঠ বন্ধ করে চলে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন ও তার লোকজন উত্তেজিত হয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফকির বাজারে তান্ডব শুরু করেন। তারা বাজারে অবস্থিত প্রতিপক্ষের ৬টি দোকান ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেন। হামলাকারীরা প্রতিপক্ষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সন্ধান করে। তন্মধ্যে, প্রতিপক্ষ প্যানেলের প্রচার সম্পাদক ব্যবসায়ী মোঃ শাহাব উদ্দিন এর বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার মা ও স্ত্রীকে মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই ঘটনায় নিহতের পিতা শরফ মিয়া বাদী হয়ে পরদিন বড়লেখা থানায় প্রতিপক্ষের ১০ জনের নাম উল্লেখ্য এবং অজ্ঞাত আরো ১৫ জন কে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১১। মামলার আসামীরা হলেন, বড়লেখা উপজেলার মুদতপুর গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের পুত্র আবুল হোসেন (৫১), মুদতপুর গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র নাজিম উদ্দিন (৪২), পাকশাইল গ্রামের আজির উদ্দিন এর পুত্র শাহাব উদ্দিন (৩৬), পাকশাইল গ্রামের মোঃ ছফির উদ্দিনের পুত্র মাছুম আহমদ (২৭), সতপুর গ্রামের নাজিম উদ্দিনের পুত্র সামস উদ্দিন (৩৫), সতপুর গ্রামের কলিম মিয়ার পুত্র ইকবাল হোসেন (২৮), বর্ণি গ্রামের আজির উদ্দিন এর পুত্র বাবুল হোসেন (৩১), পাকশাইল গ্রামের আজির উদ্দিন এর পুত্র রাইব উদ্দিন (৪০), বর্ণি গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের পুত্র জিলাল উদ্দিন (২৩) ও পাকশাইল গ্রামের মোঃ ছফির উদ্দিনের পুত্র মারুফ আহমদ (২৪) সহ অজ্ঞাত আরো ১৫ জন।

এ বিষয়ে বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়াছিনুল হক বলেন, সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশী অভিযান চলছে। আইনের হাত থেকে কোন অপরাধী রেহাই পাবে না।