ছাতক প্রতিনিধি: গতকাল ২৭ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ছাতকের ফকিরটিলা গ্রামে শামীমুল আলম নামে এক শিক্ষকের বাড়িতে যুবলীগের কিছু ছেলেরা হামলা চালায়। এতে নেতৃত্ব দেন সিলেট যুবলীগ নেতা ইমু আহমেদ। সে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তির সেক্রেটারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে এই ভাঙচুর ও হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা বাড়ির দরজা, জানালা ও নানা আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। হামলাকারীরা শামীমুল আলম ও তার বোন আনোয়ারা খানমকে মারধর করেছে। সেই সময়ে তার বাড়িতে থাকা তার ভাগ্নি হাজেরাকে মারধর ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের চিৎকারে ও আওয়াজে গ্রামবাসী ও আশপাশের মানুষজন চলে আসায় হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। প্রতিবেশীরা তাদেরকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যায়। মূলত ঘটনাটির সূত্রপাত হয় তিন বছর আগে। ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তির ছোট ভাই ইয়ামিন আরাফাত খান আত্মহত্যা করেছিলেন। এই ঘটনায় আলম খান মুক্তি তার প্রতিবেশি আনোয়ার খানের মেয়ে হাজেরা ও তার পরিবারকে দায়ী করেছিলেন। কেননা ইয়ামিন হাজেরাাকে প্রচন্ড ভালোবাসাতো। কিন্ত হাজেরা তার ভালোবাসাকে প্রত্যাখান করে। কেননা ইয়ামিন ছিল মাদকাসক্ত।
জানা যায়, প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার দুঃখে ইয়ামিন আত্মহত্যা করে। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর পর আলম খান রেগে ফেটে পড়েন। তিনি হাজেরার বাড়িতে হামলা করেন, তিনি হাজেরার বাবা মা ও ভাই মঈন উদ্দিনকে মারধর করেন ও মেরে ফেলার হুমকি দেন। এই ঘটনার কিছুদিন পর হঠাৎ হাজেরার ছোট ভাই মোস্তফা নিখোঁজ হয়, তবে হাজেরার পরিবারের দাবি এই নিখোঁজের সাথে আলম খান জড়িত। এরপর হাজেরার বাবা মারা যান এবং হাজেরা আলম খানের হাত থেকে বাঁচতে তার মাকে ও ভাই মঈন উদ্দিনকে নিয়ে মামার বাড়ি ছাতকে আশ্রয় নেয়। কিন্তু আজ তিন বছর পর সিলেটের বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সহায়তায় আলম খান হাজেরার বাবার দোকান ও ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে দখল করে নেন এবং দোকানে নিজে ব্যবসা স্থাপন করেন। এতে হাজেরার মা ও মামা ছাতক থানায় মামলা করেন। কিন্ত গোপন তথ্যের মাধম্যে আলম খান বিষয়টি জানতে পারেন। তাই তিনি ছাতক যুবলীগের সাথে যুক্ত হয়ে হাজেরার মামার বাড়িতে এ হামলা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আমাদের পত্রিকার সাংবাদিক হামলার শিকার হাজেরার মামা শামীমুল আলমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হামলাকারীদের আঘাতে আমার আমার বোন আনোয়ারা ও ভাগ্নি হাজেরা গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তারা ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু হামলাকারীরা হুমকি দিয়ে গিয়েছে, তাই আবারো হামলার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সবাই খুবই অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছি। আমরা খুবই অসহায়। আমরা পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছি, কিন্ত তারা এখনো আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এই হামলার বিষয়ে কথা বলতে আমাদের পত্রিকার সংবাদিক ছাতক থানার পুলিশদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।