• ১৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ওসমানীনগরে রাতের আধাঁরে দোকান কর্মচারীকে অপহরন ও হত্যার চেষ্ঠা

admin
প্রকাশিত এপ্রিল ১৮, ২০২৪
ওসমানীনগরে রাতের আধাঁরে দোকান কর্মচারীকে অপহরন ও হত্যার চেষ্ঠা

ওসমানীনগর প্রতিনিধি : সিলেটের ওসমানীনগরে রাতের আধাঁরে দোকান কর্মচারিকে অপহরন ও হত্যা চেষ্ঠার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দিবাগত রাত ১১টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দয়ামীর বাজারস্থ জামে মসজিদ এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় দয়ামীর বাজারস্থ ফুলকুড়িঁ সুইসট এন্ড ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরের কর্মচারী সাইখুল ইসলাম (২৮) মারাত্নক আহত হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। তিনি উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল অদুদের পুত্র।

জানা যায়,উপজেলার নুরপুর গ্রামের আব্দুল অদুদ মারা যাওয়ার পর তার পুত্র সাইখুল ইসলামের সাথে চাচা আমিরুল হক এর জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রামে সালিশ বৈঠকসহ থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ালেও সূরাহ না হওয়ায় চাচা আমিরুলের ভয়ে নিরুপায় হয়ে সাইখুল তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মোবারকপুরস্থ তার শশুর বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। সাইখুল তার পৈত্তিক সম্পত্তি বসতভিটা ছেড়ে শশুর বাড়িতে চলে আসার পর থেকে দূস্কৃতিকারীরা কিছুদিন এ বিষয়ে নিরব থাকলেও ২০২৩ সালের শেষের দিকে আমিরুল হক স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বসতভিটাটি তার নামে রেজিষ্ট্রারি করে নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।এক পর্যায়ে জমি রেজিষ্ট্রারী করে নেয়ার দাবিতে আমিরুল হক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে সাইখুল ইসলামের শশুর বাড়ি গিয়ে তার শ্বশুর-শাশুড়িকে হুমকি প্রদান করেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে সাইখুল ইসলাম তার বৃদ্ধ মাসহ স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে সুনামগন্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে তার মামা তরাজ আলীর বাড়িতে গিয়ে বসবাস শুরু করেন।

বিগত প্রায় ছয় মাস ধরে সাইখুল তার মামার বাড়িতে বসবাস করে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল দয়ামীর বাজারের ফুলকুড়িঁ সুইটস এন্ড ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরে যাওয়া আসা করে আসছিলেন। ঘটনার দিন দিবাগত রাত ১১টার দিকে সাইখুল দয়ামীর বাজার থেকে পাইকপাড়া যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দয়ামীর বাজার বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন জামে মসজিদের এলাকায় একটি কালো রংয়ের নোহাগাড়ি তার গতিরোধ করে। এসময় সাইখুল কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই নোহা গাড়ি থেকে মুখোশধারি ৪/৫ জন লোক নেমে থাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি আঘাত করে এবং জোরপূর্বক গাড়িতে তুলার চেষ্টা চালায়।এ সময় হামলাকারিদের গলার কন্ঠ শুনে মুখোশধারি দলের সাথে থাকা চাচা আমিরুল হককে শনাক্ত করতে সক্ষম হন সাইখুল। ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাইখুল বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় শেরপুরগামী একটি লকাল বাস দয়ামীর বাজারস্থ স্ট্যান্ডে দাড় করালে বাস যাত্রীরা চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে আমিরুল হকসহ মুখোশধারি দলের সদস্যরা দৌড়ে তাদের সাথে থাকা নোহা গাড়িতে উঠে গাড়িটি নিয়ে সিলেট শহরের অভিমুখে চলে যায়।পরবর্তীতে লকাল বাসের কয়েকজন যাত্রী সাইখুলকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে তার পকেটে থাকা পরিচয়পত্র থেকে দয়ামীর বাজারস্থ তার কর্মস্থল ফুল কুড়িঁর মালিক সাইস্তা মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে আমিরুল হক ও তার সহযোগীদের নাম উল্লেখ করে সাইখুল ইসলামের স্ত্রী বুশরা আক্তার ওসমানীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও থানা পুলিশ মামলাটি রুজু না করে উল্টো আসামীদের পক্ষাবলম্ভন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে বুশরা আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কান্নাড়িত কন্ঠে জানান,চাচা আমিরুল হকের ভয়ে সাইখুল তার পৈত্তিক বসতভিটা ছেড়ে বর্তমানে আমাদের নিয়ে তারা মামার বাড়িতে বসবাস করেও তাদের হাত থেকে রক্ষা হচ্ছে না। আমার স্বামিকে তারা প্রানে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরনের জন্য হামলা করছে। বর্তমানে সাইখুল আশংঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন।এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়ে এখনও অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ড করেনি পুলিশ।

ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল হক বলেন, দয়ামীর বাজারে একটি হামলার ঘটনার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।